আপনি পড়ছেন

করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত দেশগুলোর মধ্যে ইতালির নাম প্রথম সারিতে রয়েছে। গত ৪ মে করোনার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় দ্বিতীয়বারের মতো লকডাউন দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। আগামী ১৮ই মে পর্যন্ত স্থায়ী হবে এ লকডাউন। এ সময়ে সব ধরনের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ইতালির অধিকাংশ জনগণ খ্রিস্টধর্মাবলম্বী। সেখানের ধর্মপ্রেমিক জনগণের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে- ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার জন্য। 

italy masjid

ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধি (বিশপ) দলের একটি কনফারেন্স থেকে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়াার ব্যাপারে জোরালো কণ্ঠে দাবি জানানো হয়। এতে সাড়াও মিলেছে সরাকরের পক্ষ থেকে। ইতালির সরকার ক্যাথলিকদের সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরপূর্বক দেশটির সব চার্চ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

দেশটির সংবিধান ধর্মীয় পক্ষপাত সমর্থন করে না। সব ধর্মের সমান অধিকার রয়েছে। তবুও ইতালির ২.৫ মিলিয়ন মুসলমান এখনো নিশ্চিত হতে পারছেন না, চার্চগুলো খুলে দেয়ার পাশাপাশি ইতালির মসজিদগুলোও খুলে দেওয়া হবে কি না? অবশ্য মসজিদ বন্ধ রেখেই মাহে রমজানের তিন দশকের আড়াই দশক কাটিয়ে ফেলেছেন ইতালির মুসলমানরা।

অবশ্য খুশির খবর হলো- এরই মধ্যে জার্মানিতে অধিকাংশ মসজিদ খুলে দেয়া হয়েছে। জার্মান ইসলামিক কাউন্সিলের সূত্রে জানা যায়, নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে মুসলমানরা এরই মধ্যে জামাতের সালাত আদায় শুরু করেছেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ডেইলি সাবাহ সূত্রে জানা যায়, জার্মাানের মুসলমানরা মসজিদে ফজর, জোহর ও আসরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করতে পারছেন। মাগরিব, এশা-তারাবি ও জুমার নামাজ আদায়ের অনুমতি এখনো দেয়া হয়নি তাদেরকে।

ডেইলি সাবাহ সূত্রে আরো জানা যায়, ইতালির মসজিদগুলো একটু তড়িঘড়ি করেই বন্ধ করে দেয় সরকার। তখনো ইতালির চার্চ, বার ও রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ হয়নি। যে কারণে ইতালির মুসলমানরা শঙ্কায় আছে, চার্চ খুলে দিলেও মসজিদ খুলবে কি না। 

করোনার প্রকোপে গত মার্চে হঠাৎ করেই ইতালির সরকার সব ধরনের সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে তখন থেকেই বন্ধ ছিল চার্চ, সিনাগগ ও মসজিদসহ সব উপাসনালয়। নিষেধাজ্ঞা জারির সঙ্গে সঙ্গে ইতালির মসজিদগুলো পরিচালনার দায়িত্ব থাকা স্থানীয় মুসলমানরা করোনা প্রতিরোধে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

দুই মাস গৃহবন্দী থাকার পর লকডাউনের দ্বিতীয় পর্বে মসজিদ খুলে দেয়ার আশা করেছিলেন ইতালির মুসলমানরা। কিন্তু সব আশার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তে ঘোষণা করেন, উপাসনালয়গুলোর জন্য লকডাউনের দ্বিতীয় পর্বেও প্রথম পর্বের মতো সীমাবদ্ধতা বহাল থাকবে।

স্থানীয় মুসলমানরা মনে করছেন, উপাসনালয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণা নিঃসন্দেহে বৈষম্যমূলক। ইতালির ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রতিনিধি (বিশপ) দলও সরকারের এমন ঘোষণার তীব্র সমালোচানা করে। তারা বলেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা ইতালির জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। উপাসনা নিয়ে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ মেনে নেয়ার মতো নয়।

এই বিতর্কের পর ইতালির সরকার উপাসনালয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উপাসনালয় খুলে দেয়া হবে- তবে প্রার্থনা সংক্ষিপ্ত করার শর্তে। সে ক্ষেত্রে উপাসনালয়ে প্রবেশের আগে ও পরে জীবাণুমুক্ত স্প্রে ব্যবহার করে নেয়া জরুরি।

রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে নিয়ে এখন মুসলমানদের মধ্যেও মসজিদ খুলে দেয়ার ব্যাপারে আশার সঞ্চার হয়েছে। তারপরও স্থানীয় মুসলিম নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কেননা ইতালিতে মুসলিম আর খ্রিস্টানদেরকে সমান দৃষ্টিতে দেখা হয় না।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.