আপনি পড়ছেন

করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর ঘরে ঈদের নামাজ পড়ার ফতোয়া দিয়েছেন সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি। মধ্যপ্রাচ্যের আলেমরা এ ফতোয়ার সঙ্গে একমত পোষণ করে নিজ নিজ দেশে ঈদের নামাজ ঘরে পড়ার কথা বলেছেন। ভারতের দেওবন্দ মাদরাসা থেকেও উপমহাদেশের মুসলমাদের ঘরে ঈদের নামাজ পড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। যারা ঘরে ঈদের নামাজ পড়তে চান তাদের জন্য জানিয়ে দিচ্ছি কীভাবে ঘরে এ নামাজ পড়তে হয়।

namaz 2

ঈদের নামাজ পড়া কি আবশ্যক?

প্রথমে জানতে হবে ঈদের নামাজ পড়া আবশ্যক কি না? এ বিষয়ে হানাফি মাজহাবের ফতোয়া হলো ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব। কোনো কোনো মাজহাবে ঈদের নামাজকে ফরজে কেফায়া বলা হয়েছে। আবার কোনো মাজহাবে এ নামাজকে সুন্নাত বলা হয়েছে। কানজুদ দাকায়েক, ১৯৬ পৃষ্ঠা।

ঈদের নামাজের জন্য কি জামাত শর্ত?

শুধুমাত্র হানাফি মাজহাব মতে ঈদের নামাজের জন্য জামাত শর্ত। জামাত ছাড়া ঈদের নামাজ পড়া যায় না। তাই কারো যদি কোনো কারণে ঈদের নামাজ ছুটে যায়, তাহলে একাকী এ নামাজের কাজা পড়তে পারবে না। যেমন জামাত ছাড়া জুমার নামাজ পড়া যায় না। ইবনে রুশদ, ১ম খন্ড, ১৫৯ পৃষ্ঠা এবং মুহিতুল বুরহানি, ২য় খন্ড, ২২৯ পৃষ্ঠা।

অন্যান্য ইমামদের মতে ঈদের নামাজ জামাতে পড়া ভালো তবে আবশ্যক নয়। জামাত না পেলে একাকীও পড়া যাবে। ইমাম শাফেয়ীর মতে, কারো ঈদের নামাজ ছুটে গেলে সে একাকী কাজা আদায় করে নেবে। বুখারি শরিফের বর্ণনায় পাওয়া যায়, একবার হজরত আনাস (রা.) এর জামাত ছুটে গেলে তিনি পরিবারসহ ঘরে ঈদের নামাজ আদায় করেন। বুখারি শরিফ, ১ম খন্ড, ১৩৪ পৃষ্ঠা।

ঘরে ঈদের নামাজ জামাতে পড়বেন নাকি একা?

হানাফি মাজহাব মতে, কেউ যদি কোনো কারণে ঘরে ঈদের নামাজ পড়তে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই ঘরের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে জামাতে সালাত আদায় করতে হবে। বুখারি শরিফের হাদিসে দেখা গেছে, হজরত আনাস ঘরে ঈদের নামাজ পড়েছেন, তবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জামাতে পড়েছেন, একাকী নয়। বর্তমান লক ডাউনের কারণে কেউ ঘরে একাকী ঈদের নামাজ পড়তে চাইলে পড়তে পারবেন বলে আধুনিক হানাফি বিশেষজ্ঞরা ফতোয়া দিয়েছেন। নেহায়াতুল মুহতাজ, ২য় খন্ড, ২৮৬ পৃষ্ঠা।

ঘরে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

এ নামাজের জন্য আজান বা ইকামত নেই। একজন ইমাম হবেন। নারী-পুরুষ-শিশুরা মুকতাদি হবেন। ইমাম মুসল্লিদেরকে নিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ার নিয়ত করবেন।

তাকবিরে তাহরিমা বলার পর প্রথমে সানা পড়তে হবে। তারপর তিনবার তাকবির বলতে হবে, অতঃপর উচ্চস্বরে কেরাত পড়া, তারপর রুকুর তাকবির বলা। রুকু পর দুই সেজদা শেষে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যেতে হবে।

দ্বিতীয় রাকাতে প্রথমে কেরাত পড়তে হবে, তারপর রুকুতে যাওয়া আগে অতিরিক্ত তিনটি তাকবির বলতে হবে, অতঃপর চতুর্থ তাকবির বলে রুকুতে যেতে হবে। তারপর দুই সেজদা শেষে নিয়ম মত নামাজ শেষ করতে হবে।

হানাফি মাজহাব মতে, অতিরিক্ত তাকরিব বলার সময় হাত কান পর্যন্ত উঠাতে হবে। ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ২য় খন্ড, ১৫০পৃষ্ঠা।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর