সেই পঙ্গপালই এখন হাঁস-মুরগির খাবার!

পঙ্গপালের আক্রামণে দিশেহারা পাকিস্তানের কৃষকরা। এই পোকার আক্রামণে ইতোমধ্যে ধ্বংস হয়েছে দেশটির মাঠের ফসল। নষ্ট হয়েছে গাছের ফলও। এতে কয়েক কোটি রুপির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এমতাবস্থায় এই পোকার যন্ত্রণা থেকে কৃষকদের মুক্তি দিতে একটি 'পাইলট প্রজেক্ট' হাতে নিয়েছে দেশটির ওকরা জেলার কর্মকর্তারা।

পঙ্গপালের আক্রামণে পাকিস্তানে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল

তারা পঙ্গপাল ধরে সেটিকে হাঁস-মুরগির খাবার হিসেবে তৈরি করছেন। এতে পঙ্গপালের সংখ্যা যেমন কমছে, তেমনি হাঁস-মুরগিও পাচ্ছে উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।

দ্য ডন জানায়, এই প্রজেক্টের আওতায় প্রথমে জাল দিয়ে পঙ্গপাল ধরা হচ্ছে। তারপর সেগুলোকে কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে হাঁস-মুরগির খাবার হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে ২০ রুপি কেজি ধরে এই পোকা বিক্রি হচ্ছে।

কৌশলটি বের করেছেন দেশটির কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের বায়োটেকনোলজিস্ট জোহর আলী ও খাদ্য সুরক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মুহাম্মদ খুরশিদ।

তারা বলেন, এই প্রজেক্টটি যখন হাতে নেওয়া হয়, তখন অনেকেই তাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেছিল। কারণ মানুষ ভাবতে পারেনি যে, এ পোকা ধরে হাঁস-মুরগির খাবার হিসেবে বাজারে বিক্রি করা যাবে।

পঙ্গপাল ধরা খুব সহজ উল্লেখ্য করে তারা জানান, ২০১৯ সালে ইয়েমেনে পঙ্গপাল হানা দিয়ে কয়েকটি অঞ্চলে এভাবেই পোকাটির আক্রমণ প্রতিরোধ করা হয়। সেখান থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে এই প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছে।

গত বছর মার্চে প্রথম পাকিস্তানে পঙ্গপালের আক্রমণ দেখা দেয়। এরপর তা দেশটির সিন্ধু, খাইবার পাখতুনখাওয়া ও দক্ষিণ পাঞ্জাবে ছড়িয়ে পড়ে। পোকাটির আক্রমণে দেশটির ৯ লাখ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সরকার এটিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। পাশাপাশি পঙ্গপাল মারতে ‘ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান’ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এই পরিকল্পনার আওতায় আক্রান্ত অঞ্চলে ৩ লাখ লিটার কীটনাশক ছিটানো হয়।