প্রত্যাশা ও শঙ্কার মধ্যেই এগুচ্ছে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের কাজ

যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি বলছে, করোনাভাইরাসের একটি ভ্যাকসিন সম্ভবত আগামী শীতের শেষে কিংবা জানুয়ারিতে পাওয়া যাবে। যদিও একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কারে এক যুগের বেশি সময় প্রয়োজন। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় ঝুঁকি মাথায় নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে গবেষণা।

প্রতীকী ছবি

এ বিষয়ে একমত যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় এলার্জি ও সংক্রামক রোগ ইনিস্টটিউটের পরিচালক অ্যান্থনি ফসি। তিনি বলেন, গবেষণার সব পদক্ষেপ যদি শতভাগ সফলতা পায় তাহলে আশা করা যায়, আগামী ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে একটি ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, শতভাগ সফল পদক্ষেপ হলেও একটি ভ্যাকসিন গবেষণায় ১২ থেকে ১৮ মাস সময় প্রয়োজন। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়ে যাওয়া মানেই সবার কাছে তা পৌঁছে যাওয়া- বিষয়টি এমন না। ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে আবিষ্কার হলে তা জনসাধারণের জন্য বাজারে অহরহ পাওয়া যাতে পারে ২০২১ সালের শেষ দিকে।

প্রতীকী ছবি

সে বিষয়ে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। তাদের ইচ্ছা, একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যাতে তারা জনসাধারণের জন্য সরবারাহ করতে পারে। সেই লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় ভ্যাকসিনের কোটি কোটি ডোজ মজুদ করে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এস্ট্রাজেনকার সঙ্গে মার্কিন সরকারের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তিও হয়েছে। সেই চুক্তির আওতায় মোট ৩০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন মজুদ করে রাখা হবে। আগামী অক্টোবরেই সেগুলোর সরবরাহ শুরু করা যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এস্ট্রাজেনকা মূলত কাজ করে চলেছে অক্সফোর্ডের গবেষক দলটির সঙ্গে। এই দলটির তৈরি নমুনা ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এই গবেষণার দৌড়ে সবচেয়ে ওগিয়ে আছে বলে জানা গেছে। তাদের এই ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত মানবদেহে ভালো ফলাফল দিয়েছে।

তারা দাবি করছে, এটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। সেইসঙ্গে দেহে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থাও গড়ে তুলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলে ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সায়েন্স এন্ড ইন্ডাসট্রির পরিচালক ফ্রেড লেডলে বলেন, একটি ভ্যাকসিন ছয় মাসের মধ্যে তৈরি করা রীতিমতো অবাস্তব বিষয়। যদি ১৮ মাসের কথা বলা হতো তাহলে আরো বেশি বাস্তবসম্মত হতো। কারণ ভ্যাকসিন গবেষণা এখন পর্যন্ত সীমিত সংখ্যক মানুষের ওপরই করা হয়েছে। একটি গবেষণার তৃতীয় ধাপে গিয়ে বৃহৎ সংখ্যক মানুষের ওপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। তখন এর বাস্তব প্রতিক্রিয়া বের হয়ে আসে। এই প্রক্রিয়ায় অনেক সময়ের প্রয়োজন। ছয় মাসে যা অসম্ভব।