করোনার ওষুধ বলে দশগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে ‘আর্সেনিক আলবাম’

দেশজুড়ে চলছে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়ায় ভাইরাসটি প্রতিরোধ করাও সম্ভব হচ্ছে না। এর মধ্যেই নীলফামারীর সৈয়দপুরে কিছু অসাধু চক্র করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে ‘আর্সেনিক আলবাম’ নামের একটি ওষুধ অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে। শহরের হোমিও ওষুধের দোকানগুলোতে এই ওষুধটি পাওয়া যাচ্ছে।

করোনার ওষুধ বলে দশগুণ দামে ‘আর্সেনিক আলবাম’ বিক্রি!

জানা গেছে, ওষুধটি সেবনে করোনা আক্রান্ত রোগীরা সেরে উঠছেন বা সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব, এমন প্রচারণা চালাচ্ছে শহরের হোমিও ওষুধের দোকানগুলো। এর ফলে দোকানগুলোতেও মানুষের উপচে পড়া ভিড়। আর এ সুযোগে ওষুধটির কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ইচ্ছা মতো দাম হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ১০ টাকা মূল্যের আর্সেনিক আলবাম বিক্রি করছেন ১০০-১৫০ টাকায়।

স্থানীয়রা জানায়, করোনা মোকাবেলায় হোমিও ওষুধ আর্সেনিক আলবাম খুবই কার্যকর বলে শহরময় ছড়িয়ে পড়ে। একটি প্রতারক চক্র পুরো শহরজুড়ে এমন প্রচারণা চালায়। এরপর থেকেই ওষুধটি কিনতে হোমিও ওষুধের দোকানগুলোতে মানুষের ভিড় লেগে যায়। এই সুযোগে ওষুধটি দশগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী।

বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানান, তরল ওষুধটি বাজারে শেষ হয়ে গেছে। তাই গুলি মিশ্রিত অবস্থায় এটি ৮০ টাকায় কিনতে হলো। অথচ এক সপ্তাহ আগেও ওষুধটির দাম ছিল মাত্র ১৫ টাকা। এটি খেলে নাকি করোনা প্রতিরোধ হয়, তাই কেনা।

বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের সোনাখুলী গ্রামের এক ক্রেতা জানান, তিনি ১০০ টাকা দিয়ে আর্সেনিক আলবাম ওষুধটি কেনেন। আবার অনেকেই এটি ৮০-১৫০ টাকায় কিনছেন। সবার একই কথা, এটি খেলে নাকি করোনা প্রতিরোধ হয়। তবে আসলেই এই ওষুধে কাজ হয় কি না, তা কেউই জানেন না।

এ বিষয়ে হোমিও চিকিৎসক ডা. শামছুল হক বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার লোভে ওষুধটির দাম দশগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। এটি সাধারণত বিভিন্ন রোগে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া ওষুধটি সেবন করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তাই সবার ধারণা, আর্সেনিক আলবাম দিয়ে করোনা চিকিৎসা করা সম্ভব এবং প্রতিরোধেও কার্যকর।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাসিম আহমেদ বলেন, শহরে আর্সেনিক আলবাম নিয়ে প্রতারণা চলছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই কথা বলেছেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরীও।