ফুসফুসের চিকিৎসায় ‘কার্যকর’ রেমডেসিভির

বিশ্বব্যাপী মরণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার থেকে কোভিড-১৯ রোগীদের সহায়ক চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি ওষুধের নাম আলোচিত হয়ে আসছে। রেমডেসিভির, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন, অ্যাভিগান, ইভারমেকটিন ওষুধগুলোর নাম বেশ আলোচনা হয়। এর মধ্যে কার্যকারিতার দিক থেকে মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যালস গিলিয়াডের রেমডেসিভির ছিল আলোচনার শীর্ষে।

রেমডেসিভির ওষুধ

ইতোমধ্যে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ওষুধটির কার্যকারিতাও প্রমাণ হয়েছে। আর সর্বশেষ তথ্যে মার্কিন গবেষকরা বলছেন, করোনারোগীদের ফুসফুসের চিকিৎসায় রেমডেসিভিার ইনজেকশন যে ‘কার্যকর’ তার প্রমাণ পেয়েছেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার বিখ্যাত নেচার জার্নালে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত বানরের ওপর গবেষণা করে মার্কিন বিজ্ঞানীরা এই প্রমাণ পেয়েছেন।

মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান গিলিড সায়েন্সেস

এতে বলা হয়, ১২টি বানরকে কোভিড-১৯ সংক্রমিত করে রেমডেসিভির ইনজেকশন দেয়া হয়। এদের মধ্যে অর্ধেক বানরকে সংক্রমণের শুরুর দিকে ওষুধটি দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা হয়। এতে দেখা যায়, বানরের শ্বাসযন্ত্রের রোগের লক্ষণ দেখা যায়নি। সেইসঙ্গে ওষুধটি বানরগুলোর ফুসফুসের ক্ষতিও হ্রাস করেছে।

গবেষকেরা আরো বলছেন, অন্যান্য প্রাণীদের ফুসফুসে ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতেও সক্ষম রেমডেসিভির। তাদের পরামর্শ, কোনো ব্যক্তি কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার পর তার নিউমোনিয়া প্রতিরোধে যত দ্রুত সম্ভব রেমডেসিভির ওষুধ প্রয়োগ করা উচিত।

প্রসঙ্গত, করোনার চিকিৎসায় প্রথম যখন রেমডেসিভিরের কার্যকারিতার কথা বলা হয়, তখন থেকেই বাংলাদেশের কয়েকটি কোম্পানি ওষুধটির উৎপাদন শুরু করে। ইতোমধ্যে করোনারোগীদের ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনে ওষুধটি প্রয়োগের অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে রেমডিসিভির ওষুধের দুটি ডোজ আছে। একটি ৫ দিনের এবং অন্যটি ১০ দিনের। ১০ দিনের ডোজের ক্ষেত্রে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা এবং ৫ দিনের ডোজে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়।

এর আগে গত এপ্রিলেই মার্কিন গবেষকরা প্রথম কোভিড-১৯ রোগীদের ফুসফুসের চিকিৎসায় রেমডেসিভির ওষুধের কার্যকারিতার কথা জানায়। তবে কোনো মেডিকেল জার্নাল থেকে এর একাডেমিক বৈধতা দেয়া হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার নেচার মেডিকেল জার্নাল বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করলো।

গিডিয়াড কর্তৃপক্ষ এর আগে জানিয়েছিল, কোভিড-১৯ রোগীদের রেমডেসিভির প্রয়োগ সুস্থ হওয়ার সময় কমিয়ে আনছে। অর্থাৎ অন্যান্য ওষুধ প্রয়োগে করোনারোগী সুস্থ হতে যে সময় লাগে, রেমডেসিভির প্রয়োগে তার চেয়ে কম সময় লাগে।