ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করেছে চীন!

গেল মে মাসের শুরু থেকেই পূর্ব লাদাখের প্যাংগং লেকের কাছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। দুই দেশই সেনা অতিরিক্ত মোতায়েন করতে থাকে। উভয়দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের খবরও পাওয়া যায়। সেইসঙ্গে এ খবরও ছড়ায় যে, চীনা সেনারা ভারতীয় সীমান্তে প্রবেশ করেছে এবং ভারতীয় সেনাদের ধরে নিয়ে গেছে।

ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করেছে চীন!

বিষয়টি নিয়ে টুইটারে লাগাতার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে প্রশ্ন করেছিলেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। চীন ভারতের ভূখণ্ড দখল করেছে কি না- তা জানতে চেয়েই তার এই প্রশ্ন।

এমনকি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে টার্গেট করে কংগ্রেসের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের কটাক্ষ- চীনারা লাদাখে আমাদের ভূখণ্ড দখল করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর প্রধানমন্ত্রী নিশ্চুপ ও অদৃশ্য হয়ে গেছেন।

চীন-ভারত সীমান্ত

কিন্তু রাহুলের গত কয়েক দিনের এই কটাক্ষের জবাব ক্ষমতাসীন বিজেপি তথা সরকারের উল্লিখিত তিন শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে আসেনি। অবশেষে উত্তরের ভার নিজের কাঁধেই তুলে নিলেন সেই লাদাখের সাংসদ জেমিয়াং শেরিং নামগেল।

নিজের মতো করে রাহুলের প্রশ্নের জবাব দিয়ে বললেন, হ্যাঁ, চীন ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করেছে! কিন্তু তার এই জবাবে বেকায়দায় পড়েছেন রাহুল ও তার দলই।

টুইটারে নামগেল লিখেছেন, আমার উত্তরে আশা করি, রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেস নেতৃত্ব সন্তুষ্ট হবেন এবং বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না।

বিজেপির ওই সংসদ সদস্য অতীতে কোন কোন এলাকা চীন দখল করেছে, তার একটি তালিকা ও এক সংক্রান্ত একটি ম্যাপও জুড়ে দিয়েছেন টুইটে। যেসব এলাকার কথা তিনি উল্লেখ করেছেন তা মূলত কংগ্রেস বা ইউপিএ সরকারের আমলেই হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

জেমিয়াং শেরিং নামগেল বলেন, নিম্নলিখিত এলাকাগুলি দখল করেছে চীন।

# ১৯৬২ সালে আকসাই চীন দখল হয়েছে কংগ্রেসের আমলে।

# টিয়া প্যাংনাক এবং চাবজি উপত্যকা দখল হয়েছে ২০০৮ সালে ইউপিএ সরকারের আমলে।

# ২০০৮ সালে ডেমজোক এলাকায় জোরাওয়ার দুর্গ ভেঙে দিয়েছিল চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। ২০১২ সালে সেখানে চেকপোস্ট স্থাপন করে চীন। এর পর চীন সেখানে ১৩টি পাকা বাড়ি তৈরি করে কলোনি স্থাপন করেছে। ওই কলোনির নাম নিউ ডেমজোক। আর এই পুরো ঘটনাই ঘটেছে ইউপিএ সরকারের শাসনকালে।

# এ ছাড়া ২০০৮-০৯ সালে ইউপিএ সরকারের সময়ই ডুঙ্গটি ও জেমজোকের মাঝে প্রাচীন বাণিজ্যকেন্দ্র ‘ডুম চেলে’ ভারতের হাতছাড়া হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, যে লাদাখ নিয়ে এত কথা সেই লাদাখেরই সংসদ সদস্য নামগেলের কৌশলী জবাবে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছে রাহুল গান্ধী ও তার দল কংগ্রেস।