করোনায় ফুটবল: যতো নিয়ম-কানুন

জীবন এবং জীবিকা দুটি শব্দের মাঝখানে এসে দাঁড়িয়েছেন বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের মানুষ। বিশ্ববাসীকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে মহামারি রূপ নেওয়া করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ। মৃতের সংখ্যা সাড়ে চার লাখ ছুঁই ছুঁই করছে। এখনো ধুঁকছেন লাখ লাখ মানুষ।

এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে ইউরোপিয়ান ঘরোয়া ফুটবল লিগগুলো। ম্যাচগুলো হচ্ছে রুদ্ধধার স্টেডিয়ামে। স্বাভাবিকভাবেই ঝুঁকিতে রয়েছেন ফুটবলার, কোচিং স্টাফ, রেফারি, সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মী, সাংবাদিক এবং সংগঠকরা। তবু ঝুঁকি কমিয়ে আনতে কিছু রীতি-নীতি চালু করেছে ফিফা ও উয়েফা। দেখে নেওয়া যাক সেসব নিয়মকানুন:

হোটেল থেকে বাসে চড়ে মাঠে আসার সময় সব ফুটবলারকে মুখমণ্ডল ঢেকে রাখতে হবে এবং মাস্ক পড়তে হবে। ড্রেসিংরুমেও তাই থাকবে। তবে অনুশীলন ও ম্যাচ চলাকালীন এসব খোলা যাবে।

নির্দিষ্ট একটি দরজা দিয়ে মাঠে ঢুকতে হবে ফুটবলারদের। যতটা সম্ভব ভিড় এড়াতে হবে। প্রতিটি ম্যাচে মাঠে ঢোকার আগে ফুটবলার, অফিসিয়ালস এবং কোচিং স্টাফদের তাপমাত্রা মাপা হবে।

গোলের ‍পর উদযাপনের সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রত্যেক ফুটবলার নিজস্ব বোতলে পানি বা জুস খাবে। এমনকি চোটে পড়ার সময় অন্য ফুটবলারের বোতলও কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না।

ম্যাচ শুরুর আগ মুহূর্তে ফুটবল জীবাণুমুক্ত করা হবে। বলবয়দের কাছে জীবাণুনাশক স্প্রে থাকবে। বল মাঠের বাইরে গেলেই তা স্প্রে করে মাঠে ফেরত পাঠাতে হবে। বলবয়দের প্রত্যেকে মুখ ঢেকে রাখবে ও গ্লাভস পড়বে।

ম্যাচের আগে বা পরে কোনো ফুটবলার জার্সি পরিবর্তন করতে পারবে না। জার্সির ওপরে যেসব বিব পড়া হবে তাও একজনেরটা অন্যজন ব্যবহার করতে পারবে না।

রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা প্রত্যেকে মুখ ঢেকে রাখবে এবং গ্লাভস পড়া থাকবে। তবে দলের কোচকে এ বিষয়ে কিছুটা ছাড় দেওয়া যাবে।

ম্যাচ শুরুর আগে অধিনায়কদের এবং রেফারিদের হাত মেলানো নিষেধ। একে অন্যকে শুভেচ্ছা জানালেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

টস করার সময় গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়ানো নিষেধ। অধিনায়ক এবং রেফারিদের মধ্যে অন্তত দুই মিটারের ব্যবধান থাকবে। ছবি তোলা নিষেধ।

টানেল দিয়ে মাঠে প্রবেশের আগ মুহূর্তে প্রত্যেককে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময়ও তাই করতে হবে।

টানেলে সারিবদ্ধভাবে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়ানো যাবে না। মাঠে নামার সময় দুই দলের ফুটবলারদের পাশাপাশি হাঁটা যাবে না। মাঠ থেকে উঠে যাওয়ার সময়ও একই নিয়ম বলবৎ থাকবে।

বিরতির সময় জার্সি জীবাণুমুক্ত করতে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় তা রাখতে হবে। গোসলের জন্য শাওয়ার ব্যবহার করা যাবে না।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলন হবে অনলাইনে। সংবাদ সম্মেলনের সময়ও সাংবাদিকরা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসতে বা দাঁড়াতে পারবে না। ম্যাচ শেষে নির্দিষ্ট কোনো ফুটবলারকে আলাদা করে কথা বলতে পারবেন না সাংবাদিকরা।

ম্যাচ শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে প্রত্যেক ফুটবলার ও রেফারিদের করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ হতে হবে। রেফারিদের জন্য আলাদা ড্রেসিংরুম থাকবে।

স্টেডিয়াম তিন জোনে বিভক্ত থাকবে। গ্রিন জোনে ফুটবলাররা মাঠ কিংবা ড্রেসিংরুমে প্রবেশ করবেন। ব্লু জোন দিয়ে সাংবাদিক বা ক্লাব পরিচালকরা প্রবেশ বা বের হবেন। রেড জোনে গাড়ি বা টিমবাস পার্কিংয়ের জায়গা।