বার্সার দর্শনের প্রশংসায় মরিনহো

হোসে মরিনহো। প্রায় তিন দশক ধরে আলোচিত এক কোচ। পর্তুগিজ কোচ বিখ্যাত হয়েছেন ২০০৪ সালে; পোর্তোকে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতিয়ে। এরপর ইন্টার মিলানকেও ইউরোপ সেরার মুকুট এনে দিয়েছেন তিনি। ‘স্পেশাল ওয়ান’ ‘অনলি ওয়ান’ ‘হ্যাপি ওয়ান’ খ্যাত কোচ যেখানেই গেছেন সাফল্য পেয়েছেন দুহাত ভরে।

এসব সাফল্য তাকে প্রায় দুই দশক ধরে বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচের তকমা দিয়েছে। পর্তুগিজ কোচ রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি, বেনফিকা, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবেরও দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন ইংলিশ ক্লাব টটেনহাম হটস্পারের ডাগ আউটে। ক্যারিয়ারজুড়ে সাফল্য পাওয়া মরিনহোর আর কোনো আক্ষেপ থাকার কথা নয়।

খেলোয়াড়ি জীবনে বিখ্যাত কোনো ক্লাবের হয়ে খেলতে পারেননি মরিনহো। সেই আক্ষেপ তিনি ঘুচিয়ে দিয়েছেন কোচ হিসেবে। নব্বই দশকে কোচিংয়ে তার হাতখড়ি হয় বার্সেলোনার সাবেক দুই কোচ স্যার ববি রবসন ও লুইস ফন গালের হাত ধরে। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পর্তুগালের দুই ক্লাব পোর্তো ও বেনফিকা এবং ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে বার্সায় মরিনহোকে সঙ্গে রেখেছিলেন রবসন।

তিনটি ক্লাবেই সফল হয়েছে এই জুটি। ১৯৯৮ সালে ডাচ ফুটবলে চলে যান ইংলিশ কোচ। এবার আর মরিনহোকে সঙ্গে নেননি তিনি। কারণ ততদিনে কোচিংয়ের উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে উঠেছেন পর্তুগিজ কোচ। বিভিন্ন ভাষাজ্ঞান তার পথচলা অনেকটাই সহজ করে দেয়। মৌকে লুইস ফন গালের সহকারী হিসেবে রেখে দেয় বার্সা। ডাচ এই কোচের সঙ্গেও কাজ করে সফল হয়েছেন মরিনহো। ফন গালের কাছ থেকেও অনেককিছু শিখেছেন তিনি।

তিন দশকের ক্যারিয়ারে সেই কৃতজ্ঞতা ঝরল মরিনহোর কণ্ঠে। মঙ্গলবার চায়নিজ পোর্টাল হুপুকে মরিনহো বলেছেন, ‘ওই সময়টা ছিল আমার কোচিং সেখার বয়স। স্টয়চকোভ, ফিগো কিংবা রোনালদোর (ব্রাজিল) মতো খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করতে পারাটা দুর্দান্ত ছিল। রবসন এবং ফন গালের মতো দক্ষ কোচের সঙ্গে কাজ করতে পারাটা ছিল পরম সৌভাগ্যের। এই দুজনই আমাকে বদলে দিয়েছেন।’

কোচদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পর বার্সার কোচিং দর্শনেরও প্রশংসা করলেন মরিনহো। তিনি বলেছেন, ‘বার্সেলোনায় থাকার ওই সময়টা ছিল সবকিছুর সংমিশ্রন। আমি বিশ্বের সেরা দুইজন কোচের সঙ্গে কাজ করেছি। ওই প্রজন্মের বিশ্বসেরা খেলোয়াড়দের খুব কাছ থেকে দেখেছি। ওই সময় বার্সার কাজ এবং খেলার দর্শনটা ছিল অবিশ্বাস্য।’

২০০০ সালে ফন গাল বার্সা ছেড়ে ফিরে গেছেন জন্মভূমি নেদারল্যান্ডসে। মরিনহো-ও ফিরেছেন নিজভূমি পর্তুগালে। সেখানে বেনফিকার দায়িত্ব নেন মরিনহো। প্রধান কোচ হিসেবে পর্তুগিজ লিগে অভিষেক হয় তার। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। অগ্রিম ঘোষণা দিয়েই সফল হতেন তিনি। এমন কোচ ফুটবলের ইতিহাসে বিরল!