কাদের জন্য ডেক্সামেথাসন, জানালো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির মধ্যে একটি প্রতিষেধকের জন্য যখন গবেষকরা পেরেশান, তখন ব্রিটিশ গবেষকরা জানান যে, কোভিড-১৯ রোগীদের জীবন রক্ষাকারী হিসেবে একটি ওষুধ পাওয়া গেছে। আর তা হলো স্টেরয়েড ওষুধ ডেক্সামেথাসন। যা বিগত কয়েক যুগ ধরেই বাজারে বিদ্যমান এবং দামেও কম।

ডেক্সামেথাসনের ব্যবহার নিয়ে যা জানালো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

এর সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) একে স্বাগত জানায়। যদিও ওষুধটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন মার্কিন গবেষকরা। ডেক্সামেথাসনের ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সুইজারল্যান্ড আরো তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও এর যথেচ্ছা ব্যবহারের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।

তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ব্রিটেন। দেশটিতে করোনারোগীদের ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ব্রিটেন রোগীদের চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসনের মজুদ ২ লাখ ৪০ হাজার ডোজ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাছাড়া ওই সংবাদ প্রকাশের পর বিশ্বের অনেক দেশই ওষুধটির মজুদ বাড়াচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরস আধানম গেব্রিয়াসুস

ডেক্সামেথাসন নিয়ে এই যখন অবস্থা তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে কেবল গুরুতর কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রেই ওষুধটি ব্যবহার করা উচিত।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরস আধানম গেব্রিয়াসুস বুধবার ডেক্সামেথাসনকে করোনার চিকিৎসায় ‘আশার আলো’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

গবেষকরাও ওষুধটি গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রেই ব্যবহারের কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, ডেক্সামেথাসন ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি এক তৃতীয়াংশ এবং অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি এক পঞ্চমাংশ কমাতে সক্ষম।

জাতিসংঘের এই সংস্থাটির কোভিড-১৯ বিষয়ক জরুরি কর্মসূচির প্রধান মাইক রায়ান এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ওষুধটি যেসব গুরুতর রোগীর ক্ষেত্রে কার্যকর বলে প্রমাণ হয়েছে, সেসব রোগীর ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা উচিত।

তিনি বলেন, মারাত্মক অসুস্থ ও গুরুতর অবস্থায় থাকা রোগীদের ব্যবহারের জন্যই ডেক্সামেথাসন ওষুধটি সংরক্ষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওষুধটির মাধ্যমে তারাই উপকৃত হতে পারেন।

ব্রিটিশ গবেষকরা জানিয়েছেন, মৃদু উপসর্গযুক্ত করোনারোগীদের ডেক্সামেথাসন কোনো সাহায্য করে না। যাদের শ্বাস নিতে সমস্যা হয় না তাদের এই ওষুধের প্রয়োজন নেই।

এর আগে ডব্লিউএইচও জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় ওষুধটি কীভাবে ও কখন ব্যবহার করা উচিত, তা নিয়ে ক্লিনিক্যাল নির্দেশনা হালনাগাদ করা হবে।