আপনি পড়ছেন

লিবিয়ার চলমান সংকট যেন আরো ঘনীভূত হতে যাচ্ছে। কারণ সম্প্রতি মিশর সরকার দেশটির নাম না করে যে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে তাতে সমর্থন জানিয়েছে ফ্রান্স। তবে লিবিয়াও মিশরকে পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছে, কোনো প্রকার আগ্রাসনে গেলে তার পরিণতি হবে ইয়েমেন অভিযানের মতো।

erdoan turkey and foyez libyaগত ৪ জুন আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট কমপ্লেক্সে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান এবং লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফয়েজ আল-সারাজ (বামে)

প্রসঙ্গত, ফ্রান্স এমন সময় মিশরকে সমর্থনের কথা জানালো যখন তুরস্কের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, লিবিয়ায় ভয়ংকর খেলায় মেতে উঠেছে প্যারিস।

মার্কিন ‘অভিযানে’ লিবিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন ও মৃত্যুর পর দেশটি মূলত দুটি অংশে ভাগ হয়ে গেছে। রাজধানী ত্রিপলিসহ একাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে জাতিসংঘ সমর্থিত জাতীয় ঐকমত্যের সরকার (জিএনএ)। অন্যদিকে, দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজি ও কয়েকটি অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তা খলিফা হাফতারের বাহিনী।

হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, ফ্রান্স ও রাশিয়া। অন্যদিকে, দেশটির বৈধ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে তুরস্ক। সম্প্রতি তুর্কি সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে জিএনএ সরকারের বাহিনী বেশ কয়েকটি এলাকা পুনরুদ্ধার করে। এ সময় আমিরাতের কয়েকটি ড্রোনও ভূপাতিত করা হয়। পুনরুদ্ধার করা শহরের অন্যতম একটি হলো সিরতে। যা মিশর সীমান্তে অবস্থিত।

egyptian president abdel fattah al sisi with khalifa haftarসম্প্রতি মিশরে গিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে বৈঠক করেন লিবিয়ার বিদ্রোহী নেতা খলিফা হাফতার

লিবিয়ার সরকারি বাহিনী সিরতে শহরের দখল নেওয়ার পরই ক্ষেপে যায় মিশর। দেশটির প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, এটি তাদের রেড লাইন। সেইসঙ্গে সামরিক অভিযানেরও ঘোষণা দেন তিনি। যদিও সরাসরি লিবিয়ার কথা তিনি উচ্চারণ করেননি, তবে তিনি যে আসলে লিবিয়ায় অভিযানের কথা বলেছেন সেটাও কারো বুঝতে বাকি থাকে না।

সিসির ওই ঘোষণায় সৌদি আরব ও আমিরাত সমর্থন দেয় বলে মিডেল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। সর্বশেষ ফ্রান্সও কায়রোকে সমর্থন দিলো।

সৌদি সমর্থিত গণমাধ্যম আল-আরাবিয়া বলছে, মিশরের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেছেন, তুরস্ক লিবিয়ায় আগুন নিয়ে খেলছে। লিবিয়ায় তুরস্কের বাড়াবাড়ি সহ্য করবে না তার দেশ।

এর আগে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লিবিয়ার স্থিতিশীলতা। তাই মিশর দেশটিতে অভিযানের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা পুরোপুরি সমর্থন করে প্যারিস। এ ছাড়া রাজনৈতিকভাবে মিশরকে সাহায্যের ঘোষণাও দেন তিনি।

তবে লিবিয়া ইস্যুতে ফ্রান্স ভয়ংকর খেলায় মেতেছে বলে অভিযোগ করেছে তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, লিবিয়ায় গত কয়েক বছর ধরে চলা সহিংসতার জন্য একমাত্র ফ্রান্স দায়ী। তাদের মদদেই সেখানে অসাংগঠনিক উপায়ে একটি শক্তির উৎপত্তি হয়েছে। যা ওই অঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। তাদের এই ভয়ংকর খেলার কারণেই লিবিয়ার মানুষ চরম কষ্টে দিন যাপন করছে।

এদিকে, আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি লিবিয়ার বিরুদ্ধে যে সামরিক অভিযান চালানোর হুমকি দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির জিএনএ সরকার।

এক বিবৃতিতে ত্রিপলি জানায়, জুয়ার ফাঁদে পা না দিতে আমরা মিশরের সামরিক বাহিনীকে আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে ইয়েমেনের মতো পরিণতি আবারো ভোগ করতে হবে তাদের। ১৯৬০ সালে ইয়েমেনে যুদ্ধ করতে গিয়ে ব্যাপক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল মিশর।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, লিবিয়া একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। এর প্রতি ইঞ্চি ভূমি রক্ষায় বদ্ধপরিকর সরকার।

এদিকে, চলমান পরিস্থিতির মধ্যেই সম্প্রতি আফ্রিকায় থাকা মার্কিন সামরিক কমান্ডের (আফ্রিকম) এক কমান্ডার লিবিয়ায় গিয়ে জিএনএ সরকারের প্রতিনিধিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যদিও বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা জানানো হয়নি।

অবশ্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা লিবিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে। তারা আশা করে, বিবাদমান গ্রুপগুলো আলোচনার মাধ্যমে সেখানে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.