আপনি পড়ছেন

ইতালিতে করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর পর বেশ কিছু প্রবাসী দেশে ফিরে আসেন। সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে সংক্রমণের হার বেশ কমে এসেছে। ফলে বাংলাদেশিরা আবারো দেশটিতে ফিরে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বিপত্তি বাধায় করোনার ‘ভুয়া’ সার্টিফিকেট। ইতোমধ্যে ফিরে যাওয়া অন্তত ৩৬ বাংলাদেশির করোনা শনাক্ত হওয়া নিয়ে দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করেছে। ফলে সেখানে বিবৃতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

bangladesh news itlay newspaperইতালির পত্রিকায় বাংলাদেশের করোনার সনদের খবর

পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, গতকাল বুধবার বাংলাদেশ থেকে ১২৫ জন যাত্রী নিয়ে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে গেলে তা অবতরণও করতে দেয়া হয়নি। আবারো তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ইতালির প্রখ্যাত ইল মেসেজ্জারো পত্রিকায় বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলা হয়েছে, দেশটিতে টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাস নেগেটিভ সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। বাংলাদেশের ভুয়া নেগেটিভ সার্টিফিকেটের কারণে ইতালি ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে বলেও মন্তব্য করা হয় প্রতিবেদনটিতে।

বাংলাদেশি গণমাধ্যমের বরাতে বহুল পরিচিত ওই পত্রিকাটি আরো বলেছে, বাংলাদেশে সাড়ে তিন হাজার থেকে থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে করোনার ভুয়া সনদ পাওয়া যায়।

corona italy death 1করোনার পিক টাইমে ইতালির অবস্থা

দেশটির আরেক বিখ্যাত পত্রিকা লা রিপাবলিকা তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, সেখানকার ল্যাজিও শহরে ১৪ জনকে নতুন সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনই দেশের বাইরে থেকে আসা এবং এই ৯ জনের ৭ জনই বাংলাদেশ থেকে আসা। এ ছাড়া ফিউমিসিনো বিমানবন্দর থেকে ১২৫ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর ঘটনা নিয়েও প্রতিবেদন করেছে পত্রিকাটি।

ইতালীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, গত ৬ জুন বাংলাদেশ থেকে একটি বিমানে যে ২৭৬ যাত্রী এসেছিল, তার ৩৬ জনের মধ্যেই করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর পরই বাংলাদেশি ফ্লাইটের ওপর এক সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দেয় ইতালীয় কর্তৃপক্ষ। ওই ঘটনার পর গতকাল বিমান অবতরণ না করতে দিয়ে ফিরিয়ে দেয় দেশটি।

এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইতালিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বলে জানা গেছে। দেশটিতে অবস্থানরত একাধিক বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী বলেন, গত ১ জুন থেকে যেসব বাংলাদেশি ইতালিতে এসেছেন তাদের সবাইকে করোনা টেস্ট করার আহ্বান জানানো হয়। রোমে বসবাসরত সব বাংলাদেশির পর্যায়ক্রমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি ধরা পড়ায় বাংলাদেশিদের নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইতালিতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের এখন বাঁকা চোখে দেখা হচ্ছে, বলেন ওই বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী।

বিষয়টি জানতে পেরে দুঃখ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।