তিন ধরনের গাছ লাগালেন প্রধানমন্ত্রী

মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ, আর্থিক স্বচ্ছলতা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় তিন ধরনের গাছ লাগানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী এক কোটি বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

গণভবনে বৃক্ষ রোপণ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশটা যেমন রক্ষা করা প্রয়োজন তেমনি দেশের মানুষের খাদ্য, পুষ্টি ও আর্থিক স্বচ্ছলতার বিষয়টিও চিন্তা করা দরকার। তাই এই বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচিতে শুরু থেকেই তিনি ফলজ, ভেষজ ও বনজ এই তিন ধরনের গাছ লাগানোর নিদের্শনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ফলজ গাছ মানুষের খাদ্যের ঘাটতি পূরণ করবে এবং পুষ্টি দেবে। ভেষজ গাছ থেকে ওষুধ তৈরি করা যাবে, যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং শরীর ভালো রাখবে। বনজ গাছ কাঠ দেবে, যা মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা বয়ে আনবে।

তিনি আরো বলেন, আজ তিনি দেশব্যাপী এক কোটি বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনে তিনি ফলজ, বনজ ও ভেষজ এই তিন ধরনের গাছ লাগিয়েছেন। ফলজ গাছ হিসেবে লাগিয়েছেন চালতা গাছ। এর পাতাগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এর ফুলগুলোও সুন্দর। এছাড়া এর অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। এটি মানুষের খাদ্য ঘাটতি পূরণেও সহায়তা করে। চালতা ফল ডালে দিয়ে খেতে খুবই ভালো লাগে।

গণভবনে বৃক্ষ রোপণ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ভেষজ গাছ হিসেবে তিনি লাগিয়েছেন তেঁতুল গাছ। এটি মানব শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি খেলে মানুষের শরীর যেমন ঠাণ্ডা থাকে তেমনি এটি উচ্চরক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়া ফুচকা-চটপটির টক তৈরিতে এটি প্রয়োজন হয়। যা সবার পছন্দের খাবার। দেশে এর চাহিদা থাকলেও ধীরে ধীরে এ গাছের জাতটির বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাই এ গাছ লাগানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

আর বনজ গাছ হিসেবে লাগানো হয়েছে ছাতিয়ান গাছ। এই গাছটি খুবই বড় হয়। এর কাণ্ডও খুব মোটা হয়। যা কাঠ হিসেবে কাজে লাগানো যায়। তাই এই গাছটি লাগানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি আরো বলেন, দেশে সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টির লক্ষ্যে বনায়ন তৈরির এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাধীনতা লাভের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে এই বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছিলেন। তাই তার স্মরণে প্রতিবছরের মতো এবারো বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে বনায়ন ছিলো মাত্র ৭ ভাগ। এরপর থেকে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির কারণে বর্তমানে দেশে বনায়ন রয়েছে প্রায় ১৭ ভাগের ওপরে। এটি ২৫ ভাগ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। এর বাইরে ১৯৮৪ সাল থেকেই প্রতিবছর পহেলা আষাঢ় বৃক্ষ রোপণ করে আসছে আওয়ামী লীগ। প্রতিবছর এই দায়িত্বটা পালন করে কৃষক লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠন।

বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব যেনো দ্রুত করোনাভাইরাস মহামারি কাটিয়ে উঠতে পারে এই প্রত্যাশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভাইরাস বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা সাময়িকভাবে থামিয়ে দিয়েছে। দেশের জনগণ দ্রুত এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে এগিয়ে যাবে।