১৫ বছর ধরে এমবিবিএস চিকিৎসক মাধ্যমিক পাস প্রমোদ!

দাবি করেছেন একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার। কিন্তু নেই কোনো কাগজপত্র। তারপরও নিজেকে একজন এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে গত ১৫ বছর যাবত বিভিন্ন স্থানে রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার নাম করে প্রতারণা করে আসছেন প্রমোদ চক্রবর্তী নামের এক ভুয়া চিকিৎসক।

ভুয়া চিকিৎসক প্রমোদ চক্রবর্তী

আজ বৃহস্পতিবার প্রতারণার কথা স্বীকার করার প্রেক্ষিতে তদন্ত ও শুনানি শেষে তাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন মানিকগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল।

তিনি বলেন, ভুয়া চিকিৎসক প্রমোদ চক্রবর্তী নিজের পরিচয়পত্রে সব সময় ডা. প্রমোদ চক্রবর্তী, এমবিবিএস (ঢাকা), পিজিটি (সার্জারি), মেডিকেল অফিসার, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ব্যবহার করতেন। একই সঙ্গে নিজেকে মা ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবেও পরিচয় দিতেন।

এসব তথ্য নিজের ভিজিটিং কার্ড ও ব্যবস্থাপত্রে লিখতেন। পরে দালালের মাধ্যমে রোগীদের চেম্বারে এনে চিকিৎসা করাতেন। তিনি মানিকগঞ্জ জেলা শহরের সুপার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সিংগাইর উপজেলার বাস্তা ও সাহরাইল এলাকায় ফার্মেসি, ঢাকার সাভার আধুনিক হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত রোগী দেখতেন। স্থানভেদে ৩০০ থেকে এক হাজার টাকা ভিজিট নিতেন। মাঝেমধ্যে অপারেশনও করতেন।

আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রমোদ চক্রবর্তীর কাছে চিকিৎসার নামে প্রতারণার শিকার রানা হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। সেই প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মানিকগঞ্জ কার্যালয়।

তদন্ত ও শুনানিকালে ভিজিটিং কার্ডে ব্যবহৃত পদবীর স্বপক্ষে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি এই ভুয়া চিকিৎসক। এমনকি এসএসসি কিংবা এইচএসসি পাশেরও কোনো কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি।

অভিযুক্ত ভুয়া চিকিৎসক প্রমোদ চক্রবর্তীর বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার খাগড়াকুড়ি এলাকায়। গত ১৫ বছর ধরে এই প্রতারণা করছেন বলে তিনি স্বীকার করেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর এই ধরনের প্রতারণা করবেন না মর্মে মুচলেকা প্রদান করেন। এ সময় তাকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪৪ ধারায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, প্রতারকদের ব্যাপারে জনসাধারণকে আরো সতর্ক হতে হবে। কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন অথবা ভোক্তা অধিকারের হটলাইন ১৬১২১ নম্বরে যোগাযোগ করতে হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে অভিযোগকারী জরিমানার ২৫ শতাংশ টাকা পাবেন।