৩০টি বাচ্চার জন্ম দিলো সেই অজগরটি

চলতি বছরের ২৮ মে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রুপশপুর এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে ৩১টি ডিম দেয় একটি মা অজগর। তারপর থেকে গত ২ মাস মায়ের তা’য়ে ছিলো ডিমগুলো। অবশেষে গতকাল রাত থেকে সেগুলো ফুটে বাচ্চা বের হতে শুরু করেছে।

ডিম ফুটে বের হওয়া অজগরের বাচ্চা

আজ বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ডিম ফুটে ৩০টি অজগরের বাচ্চার জন্ম হয়েছে বলে জানা গেছে। এখনো ফোটার অপেক্ষায় আছে একটি ডিম। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে আসার পর থেকে এ নিয়ে ৫ বার ডিম দিয়েছে মা অজগরটি। এর মধ্যে চারবারই ডিম ফুটে বাচ্চার জন্ম হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব জানান, ২০০৩ সালে শ্রীমঙ্গলের মীর্জাপুর এলাকা থেকে স্ত্রী অজগরটিকে উদ্ধার করা হয়। ওই এলাকার বাসিন্দারা ছাগল খাওয়ার কারণে সাপটিকে আটক করে। এরপর থেকে তাদের ফাউন্ডেশনেই আছে সাপটি।

তিনি আরো জানান, এ নিয়ে পাঁচবার ডিম দিয়েছে অজগরটি। প্রথমবার ডিম দেয় ২০০৪ সালে, দ্বিতীয়বার ২০০৭ সালে, তৃতীয়বার ২০১১ সালে, চতুর্থ বার ২০১৯ সালে এবং সর্বশেষ চলতি বছরের ২৮ মে ডিম দেয় মা অজগরটি। এর মধ্যে প্রথমবার ডিম দেয় ৩২টি, দ্বিতীয়বার ২৯টি, তৃতীয়ার ৩০টি, চতুর্থবার ৩১টি এবং এবার দিয়েছে ৩১টি। প্রতিবার ডিম ফুটে বিভিন্ন সংখ্যক বাচ্চার জন্ম হলেও ২০০৭ সালের সবগুলো ডিম নষ্ট হয়ে যায়।

এভাবেই কুণ্ডলী পাকিয়ে ডিমে তা দেয় মা অজগর- পুরান ছবি

চলতি বছর সবচেয়ে ভালো সংখ্যক ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়েছে উল্লেখ্য করে তিনি আরো জানান, প্রতি বছরই কিছু না কিছু ডিম নষ্ট হয়ে যায়। তবে এবার সবগুলো ডিম ফুটেই বাচ্চা বের হবে আশা করা যায়। ইতোমধ্যে ৩০টি বাচ্চা ডিম ফুটে বেরও হয়েছে। বাকিটাও শিগগিরই ফুটে যাবে।

সজল দেব আরো জানান, প্রতি বছর অজগরটির ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পর সেগুলোকে শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এবং সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হবে না। সবগুলো বাচ্চা ফুটলেই সেগুলোকে প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে। অজগরের বাচ্চা জন্মের পর থেকেই চলতে পারে এবং নিজের খাদ্য নিজে সংগ্রহ করতে পারে। তাই প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করায় বেঁচে থাকতে তাদের কোনো সমস্যা হবে না।

পুরুষসঙ্গীর অভাবে মা অজগরটি নিয়মিত ডিম দিতে পারে না জানিয়ে তিনি বলেন, স্ত্রী অজগরটি একা থাকে। মাঝে মাঝে যখন পুরুষ অজগর ধরা হয় তখন তাকে স্ত্রী অজগরটির সঙ্গে রাখা হয়। তখন সে সঙ্গী পায়। কিন্তু পরে আবার পুরুষ অজগর অবমুক্ত করে দিলে স্ত্রী অজগরটি একা হয়ে যায়।