অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন বই ব্যবসায়ীরা

দীর্ঘ চার মাসের বেশি সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তীব্র আর্থিক সংকটে পড়েছেন বই ব্যবসায়ীরা। বেচাকেনা না থাকায় অনেকেরই পথে বসার উপক্রম। আবার অনেকে দোকান বিক্রি করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় সরকারের কাছ থেকে আর্থিক প্রণোদনা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর নীলক্ষেতের বই ব্যবসায়ীরা বলছেন, বই কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য না হওয়ায় এখন ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকলে এই ব্যবসাও চলবে। কিন্তু গত চার মাসের বেশি সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যবসা হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে দুরবস্থা ক্রমশ বাড়তে থাকবে। অন্য খাতের ব্যবসায়ীরা সরকারি প্রণোদনা পেলেও বঞ্চিত হচ্ছেন বই ব্যবসায়ীরা।

আবার অনেকে এতটাই আর্থিক সংকেটে ভুগছেন যে, আত্ম-সম্মানের খাতিরে অন্যের দারস্থও হতে পারছেন না। কেউ কেউ ইতোমধ্যে দোকানও ছেড়ে দিয়েছেন। বই ব্যবসায়ীদের নীরব কান্না শোনার মতো কেউ নেই।

তারা বলছেন, করোনার কারণে সাধারণ ছুটি থাকায় এপ্রিল-মে মাস দোকান বন্ধ ছিল। জুন থেকে দোকান খোলা হলেও কোনো ক্রেতা নেই। অন্যান্য বছরে এই সময়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি, এইচএসসি পরীক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বইয়ের একটা রমরমা ব্যবসা হতো। কিন্তু এ বছর সেটিও বন্ধ। ফলে সারাদিন মিলিয়ে এখন একজন ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে নীলক্ষেত ইসলামিয়া মার্কেট বণিক বহুমুখী সমিতির পরিচালক ও লাইফ পাবলিশার্সের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, তাদের মার্কেটে ৭ শতাধিক বইয়ের দোকান আছে। প্রতি দোকানে গড়ে তিন জন করে কর্মচারী আছেন। তাদের সকলের পরিবারের আয় বই ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে কোনো আয় নেই। সরকার কিংবা অন্য কোনো সংস্থা থেকেও সহযোগিতা করা হয়নি। তাই অন্য ব্যবসায়ীদের মতো পুস্তক ব্যবসায়ীদের জন্যও প্রণোদনা ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।

নীলক্ষেত শাহজালাল মার্কেট বহুমুখী সমিতির সভাপতি এম আবু জাফর বলেন, বেচাকেনা না থাকায় কর্মচারীদের পুরো বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া মাস শেষে দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, বছর শেষে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি রয়েছে। সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা না পেলে এগুলো পরিশোধ করা কষ্টকর হয়ে পড়বে। এমন অবস্থায় আছি যে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত পাততেও পারছি না।