আগস্টের মাঝামাঝি ভ্যাকসিন আনার চেষ্টায় রাশিয়া!

নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। কবে এর একটি কার্যকর প্রতিষেধক আসবে সে দিকেই তাকিয়ে আছে সবাই। বিজ্ঞানীরাও দিন-রাত এক করে এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন। বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে মানবদেহে পরীক্ষার শেষ পর্যায়েও আছে। তবে কোনটিই এখনো শতভাগ কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। এরই মধ্যে নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে রাশিয়া।

করোনার প্রতিষেধক- প্রতীকী ছবি

দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে করোনার কার্যকর প্রতিষেধক বাজারে আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন রুশ বিজ্ঞানীরা। মস্কোভিত্তিক গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউটের আবিষ্কৃত প্রতিষেধকটি আগামী ১০ আগস্ট অথবা তার আগে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে তারা আরো বলেন, গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা প্রতিষেধকটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। অনুমোদন পাওয়ার পর প্রথমে ভ্যাকসিনটি সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হবে। এরপর জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য বাজারে ছাড়া হবে।

রুশ কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে ভ্যাকসিনটি যদি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অনুমোদন পায়, তাহলে রাশিয়াই হবে বিশ্বে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী প্রতিষেধকের অনুমোদন দেওয়া প্রথম দেশ। যদিও গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউটের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনটি বর্তমানে হিউম্যান ট্রায়ালের দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে। পাশাপাশি এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরীক্ষার ফলাফলও প্রকাশ করা হয়নি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর প্রতিবেদন

এ বিষয়ে রাশিয়ার সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেন, করোনার ভ্যাকসিনের অনুমোদন একটি স্পুটনিক মুহূর্ত। ১৯৫৭ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন যেমন গোটা বিশ্বের মধ্যে প্রথম মহাকাশে সফলভাবে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছিলো। তেমনি রাশিয়াই প্রথম করোনার শতভাগ কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করবে।

রাশিয়ার সার্বভৌম সম্পদ তহবিলই গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউটের প্রতিষেধক আবিষ্কার ও গবেষণার অর্থ সরবরাহ করছে।

চূড়ান্ত অনুমোদনের কথা বললেও এখনো এ ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশ করেনি রাশিয়। ফলে এর কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে অন্যান্য দেশের বিজ্ঞানীদের মনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউটের প্রতিষেধকটি বর্তমানে মানবদেহে পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে। আগামী ৩ আগস্ট বা তার পর থেকে এর তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু হবে। তাই মাত্র সাতদিনের মধ্যে এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।

তবে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকোর দাবি, হিউম্যান ট্রায়ালের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় সফল হলেই এটিকে বাজারে আনা হবে। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার জন্য ৮০০ জন স্বেচ্ছাসেবককে তৈরি রাখা হয়েছে।