করোনাকালেও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে পুরনো চিত্র

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির কারণে গত রোজার ঈদে অনেকেই বাড়ি যেতে পারেননি। তাই এবার করোনাতঙ্ক থাকলেও কোরবানির ঈদে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে বাড়ির পথে ছুটছে মানুষ। ফলে মহাসড়কগুলোতে কয়েকগুণ বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। পাশাপাশি পশুবাহী ট্রাক ও বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা বেশ কিছু সময় বন্ধ থাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসগড়কে থেমে থেমে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৬৫ কি. মি. যানজট

শুক্রবার ভোর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ৬৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থেমে থেমে যানজট দেখা গেছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই থেকে বঙ্গবন্ধ সেতু পর্যন্ত এ যানজট দেখা যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ঘরমুখো মানুষ।

হাইওয়ে পুলিশ বলছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও পশুবাহী ট্রাকের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু টোল প্লাজা ৮৯ মিনিট বন্ধ থাকায় এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এটি স্থায়ী যানজট নয়। থেমে থেমে গাড়ি চলছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহসড়কের এ যানজট সবচেয়ে তীব্র দেখা গেছে মির্জাপুরের পাকুল্যা, বাঐখোলা, নাটিয়াপাড়া, করটিয়া, তারুটিয়া, রাবনা পাইপাস ও এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত। এসব জায়গায় যানবাহনগুলোকে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে দেখা গেছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৬৫ কি. মি. যানজট

ঢাকা থেকে রিজার্ভ যাত্রী নিয়ে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে যাচ্ছে পরিস্থান পরিবহনের একটি বাস। এ বাসের চালকের সহকারী জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার সময় তারা ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করেন। আজ শুক্রবার ১১টা পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখন সিরাজগঞ্জ পৌঁছতে পারেননি। আটকে আছেন টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাসে। যানজট আর এত ধীর গতিতে গাড়ি চলছে যে, আর কত সময় পর তারা সিরাজগঞ্জ পৌঁছতে পারবেন, তা তিনি বুঝতে পারছেন না।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা থেকে সাভারের বাইপাইল পর্যন্ত আসতেই যানজটের কারণে তাদের সারারাত চলে গেছে। এরপর প্রায় আড়াই ঘণ্টায় গোড়াই থেকে পাকুল্লা পর্যন্ত এসেছেন। এরপর আবার থেমে থেমে এখন আশেকপুর বাইপাস পর্যন্ত এসেছেন। এতে যাত্রীরা তো বটেই, তাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে যাওয়া এক যাত্রী জানান, গতকাল রাত ১১টায় ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছেন। আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতে পারেননি। কখন বাড়ি পৌঁছাবেন বুঝতে পারছেন না।

বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৬৫ কি. মি. যানজট

আশেকপুর বাইপাসে দায়িত্বরত টাঙ্গাইল ট্রাফিক পুলিশের সহকারী টিএসআই বাবর আলী বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকার মতো যানজট কোথাও নেই। বঙ্গবন্ধু সেতু পারাপারে একটু সমস্যা হওয়ায়, কিছু কিছু স্থানে একটু গাড়ি চলাচলে বিরতি দেওয়া হচ্ছে। তবে তা বেশিক্ষণের জন্য নয়।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৪৮ হাজার ৩২১টি গাড়ি আসা-যাওয়া করেছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেকগুণ বেশি যানবাহন পারাপার হওয়ায় সেতুর ওপর চাপ পড়ছে। তাই চাপ কমাতে টোল প্লাজা ৮৯ মিনিট বন্ধ রাখা হয়। এ জন্য মহাসড়কের কিছু কিছু জায়গায় থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। পুলিশ এ সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, আগামী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।