করোনায় কমেছে চায়ের দাম

নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির প্রভাবে দেশের অভ্যন্তরে কমেছে চা পানের পরিমাণ। ফলে একদিকে যেমন কমেছে পানীয়টির বিক্রি, অন্যদিকে কমেছে এর দাম। এতে করে চলতি মূলধন জোগান ও ব্যাংক ঋণ পরিশোধে বাধার মুখে পড়েছে শিল্পটি। তাই এ সংকট কাটিয়ে উঠতে চা শিল্পকে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ সুদ হারে মূলধন ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

করোনায় কমেছে চা বিক্রি- প্রতীকী ছবি

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যেখানে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চা শিল্পের সংকট কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ওই চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের চা শিল্পের ওপর। চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে চা স্টল, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও যানবাহন বন্ধ থাকায় এবং জনগণের বাইরে চলাচল সীমিত হওয়ায় অনেকটাই কমে গেছে চা পানের পরিমাণ। আর এ কারণে নিম্নমুখী হয়েছে নিলামে চা বিক্রি। ফলশ্রুতিতে বিগত কয়েকটি নিলামে বিক্রির জন্য উঠানো চা অবিক্রিত রয়ে গেছে।

এতে আরো বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গত এপ্রিল মাসে চট্টগ্রামের সাপ্তাহিক চা নিলাম কেন্দ্রে বিক্রির জন্য উঠানো ৪৬ ও ৪৭তম লট বিক্রি বন্ধ ছিলো। ফলে অবিক্রিত থেকে যায় অনেক চা। এতে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ পানীয়টির মূল্য ৪৭ শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ চা বোর্ড।

করোনায় কমেছে চা বিক্রি- প্রতীকী ছবি

আরো বলা হয়, চায়ের মূল্য হ্রাস পাওয়ায় চলতি মূলধন জোগান ও ব্যাংক ঋণ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে চা শিল্প। তাই এ আর্থিক সমস্যা নিরসনে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে অন্যান্য শিল্পের মতো চা শিল্পকেও সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশ চা বোর্ড জানায়, চলতি বছর দেশে ৭ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। ইতোমধ্যে গত পাঁচ মাসে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ১ কোটি ২৮ লাখ ৪৬ হাজার কেজি চা উৎপাদন করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আবহাওয়ার কারণে চা উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। তবে চা উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এদিকে গত বছর রেকর্ড পরিমাণে চা উৎপাদন করে বাংলাদেশ। গত বছর দেশে ৯ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়। যা চা শিল্পের ইতিহাসে বিগত ১৬৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উৎপাদন।