৪ ঘণ্টার জোয়ারে ভেসে গেলো আড়াই কোটি ‘টাকা’

গত ৫ আগস্ট হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক জোয়ার দেখা দেয় লক্ষ্মীপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা নদীতে। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলা এই অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয় নদী তীরবর্তী তিনটি উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রাম। ভেসে যায় বহু মাছের ঘের। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার প্রায় ৫ শতাধিক মাছচাষি। ভেসে গেছে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মাছ।

এভাবেই জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় লক্ষ্মীপুরের তিন উপজেলা

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বিকেল ৫টার সময় হঠাৎ করেই মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ার দেখা দেয়। রাত ৯টা পর্যন্ত চলা এ জোয়ারে প্লাবিত হয় জেলার রায়পুর, রামগতি ও কমলগর উপজেলার প্রাায় ৪০টি গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে তিন উপজেলার লক্ষাধিক বাসিন্দা।

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪ ঘণ্টা স্থায়ী ওই অস্বাভাবিক জোয়ারে জেলার প্রায় আড়াই কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে ৪৯০টি পুকুরের মাছ ও পোনা। এরমধ্যে রায়পুর উপজেলায় ৮০টি, রামগতি উপজেলায় ২০০টি এবং কমলনগর উপজেলায় ২১০টি পুকুরের মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। এতে তিন উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক মাছচাষির যথাক্রমে ক্ষতি হয়েছে ৬০ লাখ, ৮০ লাখ ও ১ কোটি ১০ লাখ টাকা।

এভাবেই জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় লক্ষ্মীপুরের তিন উপজেলা

জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত এক মাছচাষি রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের দুলাল সরদার। নিজের কোনো জায়গা-সম্পত্তি না থাকায় বসবাস করেন স্থানীয় হাজীমারা আশ্রয়কেন্দ্রে। আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য এ বছর ধার-দেনা করে একটি পুকুরে ৬০ হাজার টাকার মাছের পোনা ছাড়েন। কিন্তু ওইদিন জোয়ারের পানি কেড়ে নিয়েছে তার স্বপ্ন। মাছের পোনা ভেসে যাওয়ায় এখন তিনি একেবারে নিঃস্ব।

তার মতো এমন স্বপ্ন ভেঙেছে জেলার আরো অনেক মাছচাষির। লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে যাওয়ায় এখন তাদের সবার প্রায় পথে বসার অবস্থা। তাই সরকারি সহয়তার দিকে চেয়ে বসে আছেন এসব ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষি।

এ বিষয়ে রামগতি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন ও কমলনগর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুস বলেন, পুঁজি হারিয়ে মাছ চাষিরা এখন চরম বিপাকে পড়েছেন। উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে কর্মকর্তারা প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষিদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।