'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম' বাদ দিতে লিগ্যাল নোটিশ

সংবিধান থেকে 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম' বাদ দিয়ে সেখানে 'ধর্মনিরপেক্ষতা' চালু করার দাবিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দশ জন রাজনীতিবিদ ও আমলাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ। গত ২৯ জুলাই বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ অশোক কুমার সাহার পক্ষ থেকে এ নোটিশ পাঠানো হয়। আগামী সপ্তাহে এ নিয়ে রিট আবেদন করবেন তারা।

যাদের কাছে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে তারা হলেন- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির মহাসচিব বাবলু, গণফোরামের ড. কামাল হোসেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিব।

এ বিষয়ে আজ সোমবার আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ বলেন, লিগ্যাল নোটিশে বলে দেয়া হয়েছে- নোটিশ পাওয়ার দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা চালু করতে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও সেটা করা হয়নি। তাই আগামী সপ্তাহে এ নিয়ে আদালতে রিট আবেদন দায়ের করা হবে।

নোটিশে বলা হয়েছে, পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ, নির্যাতন এবং বেআইনি কার্যকলাপের প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃস্টানসহ অন্যান্য নাগরিকরা এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ভারত, রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের সহযোগিতায় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এর পর ১৯৭২ সালে সংবিধানে স্বাধীনতার চেতনাসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় চারটি মূলনীতি রাখা হয়েছিল। সেগুলো হলো- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

'কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংবিধানের মূলনীতিসমূহ পরিবর্তন করে দেয়া হয়। যা বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘু জনগণ গ্রহণ করেনি। ফলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এখন সাম্প্রদায়িক দেশে পরিণত হয়েছে।'

নোটিশে আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে ভারত সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের জন্য হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে সাংবিধানিকভাবে তারা হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতিও পাবে। এমতাবস্থায় বিশ্ববাসীর সামনে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিগণিত করা আবশ্যক। সেজন্য পবিত্র সংবিধানে মূলনীতি ৮ম আর্টিকেলে কোনোক্রমেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে না। সেখানে ধর্ম নিরপেক্ষতা থাকবে।