আপনি পড়ছেন

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেপ্টেম্বর থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আগের চিত্র আর দেখা যাবে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ একাধিক শিফট পরিচালনার মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে।

englsih medium school dhakaশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমন চিত্র আর থাকবে না

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে গেলেও শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে শ্রেণি কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে একাধিক শিফট পরিচালনা এবং রোস্টার করে গ্রুপ ভিত্তিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরও অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তবে এখনো এসব পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি, পর্যালোচনায় রয়েছে।

এ ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানের একটি শ্রেণিতে ৬০-৭০ জন বা অধিক শিক্ষার্থী আছে। ফলে একটি বেঞ্চে ৫ জন করেও বসতে হয়। কিন্তু করোনার কারণে এখন সেটা আর সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে ক্লাসের এক তৃতীয়াংশ বা একটি ক্লাসের ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বসানো যেতে পারে। এক বেঞ্চে দুজনের বেশি বসানো যাবে না। রোস্টার করে ক্লাসের এক গ্রুপ একদিন, পরের দিন আরেক গ্রুপ স্কুলে আসবে।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলেও আগের মতো আর স্বাভাবিক নিয়মে ক্লাসসহ শিক্ষা কার্যক্রম চলবে না। সে জন্য শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে কৌশলগত পরিবর্তন আসবে।

সম্প্রতি 'বাংলাদেশে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ক্রমান্বয়ে চালু করার সুবিধার্থে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও পেশার জন্য কারিগরি নির্দেশনা' শীর্ষক পুস্তিকা বের করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্যও একটি গাইডলাইন দেয়া হয়েছে।

ssc and equivalent exam schedule changesশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমন চিত্র আর থাকবে না

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া নির্দেশনাগুলো হলো-

=) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে মাস্ক, জীবাণুনাশক এবং নন-কন্টাক্ট থার্মোমিটার সংগ্রহ করে জরুরি কাজের পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। প্রতিটি ইউনিটের জবাবদিহিতা বাস্তবায়ন এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ জোরদার করতে হবে।

=) শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের অবস্থা পর্যবেক্ষণ জোরদার করা। স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন এবং 'প্রতিদিনের প্রতিবেদন' এবং 'শূন্য প্রতিবেদন' পদ্ধতি প্রবর্তন করা।

=) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং বহিরাগতদের শরীরের তাপমাত্রা মাপতে হবে। কারো শরীরে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা হলে তাকে প্রবেশ করতে না দেয়া।

=) শ্রেণিকক্ষ, খেলার মাঠ এবং পাঠাগারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বায়ু চলাচল ব্যবস্থা চালু করা। দিনে একাধিক বার প্রায় ২০-৩০ মিনিটের মতো উন্মুক্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রকের স্বাভাবিক মাত্রা নিশ্চিত করা।

=) শ্রেণিকক্ষ, সর্বসাধারণ কর্তৃক ব্যবহৃত হয়, এমন জায়গাসহ অন্যান্য জায়গার মেঝে ও দরজার হাতল, সিঁড়ির হাতল এবং যেসব বস্তু বারবার ব্যবহৃত হয়, সেসব বস্তু ঘন ঘন পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

=) প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চত্বরের আবর্জনা পরিষ্কার এবং আবর্জনা সংরক্ষণকারী পাত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

=) অফিস কার্যালয়ে কাগজের সীমিত ব্যবহার নিশ্চিত করা। পারস্পরিক শারীরিক যোগাযোগ কমানো এবং অনলাইন শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়া।

=) স্বাভাবিক অবস্থা না আসা পর্যন্ত সব ধরনের অভ্যন্তরীণ জমায়েত বা ক্রিয়াকলাপের আয়োজন বন্ধ রাখা। যেকোনো বদ্ধ বা ঘন জনবহুল স্থান বা অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক মিটারের কম বা সমান দূরত্ব নিশ্চিত করা।

=) শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বহির্গমন কমিয়ে দেয়া।

=) সকলের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা। হাত ধোয়াসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি শক্তিশালী করা। হাঁচি দেয়ার সময় মুখ এবং নাক ঢাকতে টিস্যু বা কনুই ব্যবহার করতে হবে।

=) শিক্ষাদানের সময় নিয়ন্ত্রণ করা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করা।

=) কোভিড-১৯ এর সন্দেহভাজন কোনো কেস থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং যারা এই কেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের দ্রুত শনাক্ত ও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা।