আপনি পড়ছেন

ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্মই নয়, একটি জীবনব্যবস্থাও। আর এই ইসলামের প্রাণ হলো সালাত। ইমানের পরই সালাত তথা নামাজের স্থান। রাসুল (সা.) বলেছেন, একজন মুসলমান আর অমুসলিমের মাঝে পার্থক্য হলো সালাত। আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, সালাত হলো দ্বীনের খুঁটি। রাসুল (সা.) ওফাতের সময় ‘সালাত সালাত’ বলতে বলতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

prayer believer

দুঃখজনক হলেও সত্য! মুসলমান সমাজ সালাতের তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। যার ইচ্ছে পড়ল, যার ইচ্ছে পড়ল না এমনটাই লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু রাসুল (সা.) বলেছেন, ইচ্ছে করে যে সালাত ছেড়ে দেয় সে কাফের হয়ে যায়।

সালাত আদায় না করার কারণে আখেরাতে কঠিন শাস্তির কথা কোরআন-সুন্নাহয় উল্লেখ আছে। ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানও সালাত ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে পারেন। এ জন্য রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিপূর্ণ ইসলামী আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নিই, সালাত ত্যাগকারী ব্যক্তির শাস্তি সম্পর্কে চার মাজহাবের ইমামগণ কী ফতোয়া দিয়েছেন।

কেউ যদি সালাত অস্বীকার করে তবে সে ইসলামকেই অস্বীকার করল। এ জন্য ইসলামী রাষ্ট্র তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। অধিকাংশ আলেমের মতে, সালাত অস্বীকারকারী ব্যক্তিকে মুরতাদের শাস্তি তথা মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। আধুনিক ইসলামী চিন্তাবিদদের মধ্যে মিশরের প্রখ্যাত গবেষক জামাল আল বাদাওয়ি এবং প্রাচীন আলেম আল্লামা শাওকানি অবশ্য এ ধরনের শাস্তির যৌক্তিকতা অস্বীকার করেছেন।

কেউ যদি সালাত স্বীকার করে কিন্তু অলসতা বা অন্য কোনো অজুহাতে আদায় না করে তাহলে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে ইমাম শাফেয়ি, ইমাম মালেক এবং ইমাম আহমদ (রহ.) এর ফতোয়া হলো, সে কাফের হবে না, কিন্তু নামাজ না পড়ার শাস্তিস্বরূপ তাকে তিন দিন জেলখানায় বন্দি রাখতে হবে। এর মধ্যে সে তওবা করলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তওবা না করলে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে।

এক্ষেত্রে দলিল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে নামাজ ছেড়ে দিলো, সে কাফের হয়ে গেলো। এ ধরনের কাফেরের জন্য মুরতাদের শাস্তি তথা মৃত্যুদন্ড দেওয়াই নিয়ম।

muslim praying

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এবং ইমাম আহমদের (রহ.) আরেক মতে, নামাজ ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তি কাফের নয়। তাকে হত্যা করাও ঠিক নয়। তবে নামাজ ত্যাগকারীকে জেলখানায় বন্দি করে রাখতে হবে এবং প্রতিদিন জুতাপেটা করতে হবে। এ শাস্তি ততদিন চলবে যতদিন সে পুনরায় নামাজে না ফেরে।

মৃত্যুদন্ড না দেওয়ার যৌক্তিকতা উল্লেখ করে ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেন, নামাজ না পড়লে কাফের হওয়ার হাদিসে কুফরি ইতেকাদি বা বিশ্বাসী কাফের বলা হয়নি, বলা হয়েছে কুফরি আমলি অর্থাৎ সে কাফেরের মত কবিরা গোনাহ করল। আর আহলে সুন্নাতের মতে, কবিরা গোনাহকারী কাফের নয়। সুতরাং তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া জায়েজ হবে না।

হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) এর সময় যারা জামাতে নামাজ পড়ত না তাদের মুনাফেক মনে করা হতো।

বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন- শরহে মুআজ্জাব, ৩য় খন্ড, ১২ পৃষ্ঠা; আল মুগনি, ২য় খন্ড, ২৯৮ পৃষ্ঠা; ফতোয়ায়ে শামী, ১ম খন্ড, ৩৯২ পৃষ্ঠা।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর