আপনি পড়ছেন

আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে মানুষের প্রথম সম্পর্ক স্রষ্টা এবং সৃষ্টির। আল্লাহ স্রষ্টা, মানুষ সৃষ্টি। সূরা নাসে মানুষের সঙ্গে আল্লাহর কী কী সম্পর্ক রয়েছে সে আলোচনা করতে গিয়ে প্রথমেই বলা হয়েছে, ‘কুল আউজু বিরাব্বিন্নাস। অর্থ: তুমি বলো, আমি মানুষের প্রতিপালকের কাছে আশ্রয় চাই।’ অর্থাৎ, আল্লাহর প্রথম পরিচয় হলো তিনি মানুষে রব। ‘রব’ এর প্রথম অর্থ হলো- স্রষ্টা। দ্বিতীয় অর্থ হলো লালনপালনকারী।

dowa

স্রষ্টার দাবি হলো সৃষ্টি তার নিঃশর্ত আনুগত্য করবে। কোনো ধরনের প্রশ্ন বা অজুহাত ছাড়াই আনুগত্যের মাথা নুইয়ে দেবে। কিন্তু এমন অনেক মানুষ আছেন আনুগত্য তো দূরের কথা স্রষ্টার পরিচয়ই জানেন না। নিঃসন্দেহে তারা চিরহতভাগাদের অন্তর্ভূক্ত।

এরচেয়েও বেশি হতভাগা তারা, যারা প্রভুর সঙ্গে ‘দেওয়া-নেওয়া’র সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। বিপদে পড়লে আল্লাহকে ডাকে, কান্নাকাটি করে, জিকির-তাহাজ্জুদে ডুবে থাকে- কিন্তু বিপদ চলে যাওয়া মাত্রই কুফরি শুরু করে দেয়। এ ধরনের মানসিকতা যারা লালন করেন তাদের সম্পর্কে ইসলাম কী বলে আসুন জেনে নিই।

১. একজন সত্যিকারের মুমিন ভালো-মন্দ সবসময় আল্লাহর আনুগত্য করে যাবে। এটা ইমানের দাবি এবং খাঁটি মুমিনের পরিচয়।

২. শুধু বিপদে পড়লেই আল্লাহকে ডাকা বা সর্বক্ষণ নামাজ-রোজায় ডুবে থাকা আর বিপদ চলে গেলে আল্লাহকে ভুলে যাওয়া ব্যক্তি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের প্রায় আটটি আয়াতে তিরষ্কার করা হয়েছে।

৩. সূরা জুমারের ৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘মানুষ যখন দুঃখ-দৈন্য, বিপদ-আপদের সম্মুখীন হয় তখন সে বিপদ-মুক্তির জন্যে একাগ্রচিত্তে তার প্রতিপালককে ডাকে। কিন্তু যখন তিনি আল্লাহর অনুগ্রহ দ্বারা তাকে বিপদ-মুক্ত করেন, তখন সে তাঁকে ভুলে যায়। বরং উল্টো আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করায়, সাধারণ মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্যে। হে নবী! ওদের বলো, ‘এই অকৃতজ্ঞ অবস্থায় তোমরা কিছুকাল পার্থিব জীবন উপভোগ করে নাও। পরকালে অবশ্যই তোমরা জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে।’

dowa 1

৪. পাকিস্তানের প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানাভীকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ ধরনের মানুষ ওদের চেয়ে ভালো, যারা বিপদে পড়লে আল্লাহকে ডাকে না।

হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, ‘যারা আল্লহার কাছে নিজের বিপদাপদ-ভালোমন্দের প্রার্থনা করে না, তাদের ওপর আল্লাহর রাগ হন।’

আর কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে প্রার্থনা করে- তারা মুশরিক। তাদের জন্য রয়েছে জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি।’

৫. কোনো মানুষ এ কথা বলার অধিকার রাখে না বা কাউকে হেয় অথবা টিটকারী করে বলতে পারে না যে- তুমি শুধু বিপদে পড়লেই নামাজ-কালাম পড়ো, তোমার নামাজ কবুল হবে না। আসলে কার ইবাদত কখন কবুল হয় এটা কেবল আল্লাহই ভালো জানেন। পৃথিবীর কোনো মানুষ এ বিষয়ে জানতে পারেন না।

৬. শুধু বিপদে পড়লে আল্লাহকে ডাকা বা আল্লাহর সঙ্গে ‘গিভ এন্ড টেক’ সম্পর্ক তৈরির মানসিকতা আসলে এক ধরনের ইমানি অসুস্থতা। মহান আল্লাহ আমাদের এ ধরনের অসুস্থতা দূর করে সুস্থ এবং প্রশান্ত ইবাদতগুজার-পরহেজগার বান্দা হিসেবে কবুল করুন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর