আপনি পড়ছেন

হাদিস শরিফে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মান বানা লিল্লাহি মাসজিদান, বানাল্লাহু বায়তান ফিল জান্নাহ। অর্থ, যে ব্যক্তি দুনিয়ার বুকে একটি মসজিদ বানাবে, জান্নাতে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য একটি চমৎকার ঘর বানাবেন।’ তিরমিজি শরিফের এই হাদিসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগণ বলেন, পরিপূর্ণ মসজিদ বানানোর সামর্থ্য যাদের নেই তারা যদি অল্পবিস্তর অর্থ দিয়ে কিংবা শ্রম অথবা পরামর্শ দিয়েও যদি মসজিদ বানাতে সহযোগিতা করে তা হলেও আল্লাহপাক তাদের জন্য জান্নাতে একটি ঘর বরাদ্দ করবেন।

islam 1

আখেরাতের অশেষ পুরস্কারের আশায় মসজিদ বানানোর কাজে শরিক হওয়াকে অনেকে পরম সৌভাগ্য মনে করে থাকে। ধনী-গরীব প্রত্যেকে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী মসজিদ নির্মাণে অংশগ্রহণ করে থাকেন। এক্ষেত্রে একটি বিষয় খুব সতর্ক থাকা জরুরি যে, মসজিদের ফান্ডে একটি হারাম পয়সাও যেন না ঢুকে। দুঃখজনক হলেও সত্য! মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে এ বিষয়টি এখন আর তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না।


মসজিদের আয়ের ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন ফকিহরা। প্রশ্নটি মসজিদ সংশ্লিষ্ট সবার জানা থাকা জরুরি। তাছাড়া যারা নিয়মিত মুসল্লি এবং মসজিদের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক আছে- তাদেরও বিষয়টি জানা থাকা ভাল। ফকিহরা প্রশ্ন তুলেছেন, মসজিদ নির্মাণের জন্য অমুসলিমদের দান কি গ্রহণ করা যেতে পারে? আসুন জেনে নিই এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা কী?

১. মসজিদের যে কোনো কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সবার আগে যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে তা হলো- মসজিদ আল্লাহর ঘর। অতি পবিত্র জায়গা। এমন কোন আচরণ-উচ্চারণ, কাজ-কর্ম করা যাবে না যাতে করে মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট হয়।

২. হারাম পথে উপার্জিত একটি পয়সাও মসজিদের জন্য গ্রহণ করা যাবে না। যিনি দান করছেন তার ভাব-গতি দেখে যদি নিশ্চত হওয়া যায়, দাতার মাঝে ইখলাসের অভাব আছে কিংবা জাগতিক কোনো উদ্দেশ্য অথবা স্বার্থ লুকিয়ে আছে- এমন ব্যক্তির হালাল পয়সাও মসজিদের জন্য নেওয়া জায়েজ নেই বলে মনে করেন অধিকাংশ ফকিহ।

azan

৩. মসজিদের প্রয়োজনে সামর্থ্যবান মুসলমানদের থেকে আর্থিক সহযোগিতা চাওয়া জায়েজ। তবে এমন কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা জায়েয নয় যে, দাতাগোষ্ঠী দান করতে বাধ্য হয়। আবার কেউ দান করতে না চাইলে তাকে হেয় করা বা কটু কথা বলাও ইসলাম সমর্থন করে না।

৪. অমুসলিমদের দানের ব্যাপারে ফকিহদের বক্তব্য হলো, মসজিদের প্রয়োজনে অমুসলিমদের থেকে সহযোগিতা চাওয়া মসজিদের মর্যাদার খেলাফ। একান্তই বাধ্য না হলে অমুসলিমদের কাছে মসজিদের জন্য সাহায্য চাওয়া উচিত নয়।

৫. অমুসলিমরা যদি স্বেচ্ছায় মসজিদে দান করতে চায় এবং তারা যদি এটিকে ভালো কাজ মনে করে তাহলে তাদের সহযোগিতা নেওয়াতে কোন অসুবিধা নেই। এক্ষেত্রে দেখতে হবে, এমন ব্যক্তির আয়ের উৎস সুস্পষ্ট কোনো হারামের সঙ্গে জড়িত কিনা। যেমন তিনি মূর্তি অথবা মদের ব্যবসা কিংবা রাষ্ট্রকর্তৃক অবৈধ কোনো ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন করেছেন কি না ইত্যাদি। কেননা এমন ব্যক্তির দান মসজিদের জন্য নেওয়া জায়েজ নেই। কোন মুসলিমও যদি এ দোষে দোষী হয়- তার দানও মসজিদের জন্য নেওয়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন- আদদুররুল মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৩১ পৃষ্ঠা; বাদায়েউস সানায়ে, ৭ম খন্ড, ৩৪১ পৃষ্ঠা; ফতোয়ায়ে আলমগিরি, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৩১ পৃষ্ঠা।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর