আপনি পড়ছেন

আজান ইসলামী সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিটি ধর্মের অনুসারীদের ইবাদতগৃহে ডাকার জন্য আলাদা আলাদা নিয়ম রয়েছে। সুমধুর আজানের ধ্বনি শুনে ইবাদতঘর মসজিদে সালাতের জন্য জমায়েত হন মুসলমানরা। শরিয়তে আজানের নির্ধারিত নিয়ম রয়েছে। চলুন তাহলে আজান সম্পর্কে দশটি জরুরি প্রশ্নের উত্তর জেনে নিই।

adhan 

১. একসাথে অনেক মসজিদে আজান শুনলে কোনটার উত্তর দেব?

উত্তর:  যে আজান প্রথম শুনেছেন সেটির উত্তর দেবেন। অথবা আপনার মহল্লার মসজিদের আজানের উত্তর দেবেন। মহল্লায় যদি একাধিক মসজিদ থাকে তাহলে যেটি আপনার থেকে তুলনামূলক কাছে সেটার উত্তর দেবেন। অথবা অনেকগুলো আজান থেকে যেকোনো একটি আজান নির্দিষ্ট করে উত্তর দিলেই হয়ে যাবে।

২.  আজানের সময় কানে আঙুল দেওয়ার  বিধান কি?

উত্তর: আজানের একটি সুন্নত হলো কানে আঙ্গুল দেওয়া। এর উদ্দেশ্য হল, যাতে করে জোরে আজান দেওয়া যায়। কানে আঙুল না দিলেও আজান হয়ে যাবে।

৩. অজু ছাড়া আজান দেওয়ার হুকুম কি?

উত্তর: আজানের আরেকটি সুন্নত হল- পবিত্রতার সঙ্গে আজান দেওয়া। অজু করা আজানের শর্ত নয়। অজু ছাড়া আজান দিলে হয়ে যাবে। এতে গুনাহ হবে না। তবে গোসল ফরজ অবস্থায় আজান দেওয়া হারাম।

৪. আজানের পর  কি হাত তুলে দোয়া পড়তে হয়?

উত্তর: আজানের পর হাত তুলে দোয়া করা এক দল আলেমের মতে মুস্তাহাব, আরেক দলের মতে বেদাত। আজানের দোয়ার জন্য হাত তোলা শর্ত নয়।

৫. নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার আগে আজান দিয়ে ফেললে কী করনীয়?

উত্তর: ওয়াক্ত হবার আগে আজান দিলে তা ধর্তব্য নয়। ওয়াক্ত হওয়ার পর নতুন করে আবার আজান দিতে হবে।

৬. রেডিও-টেলিভিশনে প্রচারিত আজানের শরীয় মর্যাদা কী?

উত্তর: রেডিও-টেলিভিশনে প্রচারিত আজানের জবাব দেওয়া জরুরি নয়। প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত আজান মূলত উৎসাহমূলক আজান। ফকিহদের মতে, এ ধরনের আজানের শরয়ি কোনো মর্যাদা নেই।

৭. কোরআন তেলাওয়াতের সময় আজান দিলে কি করব?

উত্তর: তেলাওয়াত বন্ধ করে আজানের জবাব দেওয়া উচিত। কোরআন তেলাওয়াত করা নফল, আর আজানের জবাব দেওয়া ওয়াজিব।

৮. নামাজে থাকাকালীন সময় আজান দিলে কি জবাব দিতে হবে?

উত্তর: নামাজরত ব্যক্তি  আজানের জবাব দিলে নামাজ ভেঙে যাবে। তাই আজানের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে আজান শুরু হলে নামাজের নিয়ত করা উচিত নয়। আজান শেষ হলে নিয়ত করবে।

৯. নবজাতকের কানে আজান দেওয়ার নিয়ম কি?

উত্তর: নবজাতকের ডান কানে আজান দেওয়া এবং বাম কানে ইকামত বলা সুন্নাত।

১০. আজানের পর আলাদা করে মুসল্লিদের ডাকার হুকুম কি?

উত্তর: পূর্বে আজানের পর আলাদা করে নামাজের জন্য মুসল্লিদের ডাকা মাকরূহ মনে করতেন আলেমরা। কিন্তু পরবর্তীতে আলেমরা বলেন, মানুষ এখন দ্বীনের ব্যাপারে অলস হয়ে গেছে। তাই আজানের পর তাদেরকে আলাদা করে নামাজের জন্য ডাকা সুন্দর পদ্ধতি।

অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর পাকিস্তানের প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ এবং মুফতি ইউসুফ লুধিয়ানাভির ফতোয়া সংকলন ‘আপকা সাওয়াল কা জওয়াব’ গ্রন্থের প্রথম খন্ডের আজান অধ্যায় থেকে নেওয়া হয়েছে। মিশরের বিখ্যাত শরিয়ত বিশেষজ্ঞ সাইয়েদ সাবেকের ফিকহুস সুন্নাহ গ্রন্থের প্রথম খন্ডের আজান অধ্যায় থেকেও কিছু প্রশ্নের উত্তর নেওয়া হয়েছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর