ই-ভ্যালি নিয়ে তদন্ত করবে সরকারের ৭ সংস্থা
- Details
- by নিজস্ব প্রতিবেদক
অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে ওঠা প্রতারণা, জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সরকারের ৭ সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত রোববার এসব চিঠি পাঠানো হয়।
অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি- প্রতীকী ছবি
এর আগে গত ২৪ আগস্ট ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তিন সদস্যের এই কমিটিতে নেতৃত্ব দেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবদুছ সামাদ আল আজাদ। তদন্ত শেষে গত বৃহস্পতিবার একটি অন্তবর্তীকালীন প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় কমিটি। সেই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেই গত রোববার সরকারের সাত সংস্থাকে চিঠি পাঠানো হয়।
দুদক ছাড়া অন্য সংস্থাগুলো হলো- জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাণিজ্য সচিব মো. জাফরউদ্দীন বলেন, ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো খতিয়ে দেখতে অনেক বিষয় দেখতে হবে। কিন্তু সবগুলো বিষয় খতিয়ে দেখা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পড়ে না। এ জন্য সঠিকভাবে তদন্ত করাও সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিষয়গুলো গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট ৭ সংস্থাকে অনুরোধ করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
দুদকে পাঠানো চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ডিজিটাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ দুদক সংশ্লিষ্ট হওয়ায় সংস্থাটিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ পর্যালোচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি দেখেছে, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে পণ্যের অর্ডার নিয়ে তা সময়মতো সরবরাহ করতে পারে না। যেমন, ক্রেতারা একটি পণ্য অর্ডার করার পর তা ১৫ দিনের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ই-ভ্যালি। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই ক্রেতারা সেটি সময়মতো বুঝে পান না। এমনকি মাঝে মাঝে পণ্য বুঝে পেতে এক-দুই মাসেরও বেশি সময় লেগে যায়।
চিঠিতে আরো বলা হয়, ই-ভ্যালিতে পণ্যের অর্ডার দিতে ক্রেতাদের অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে মূল্য পরিশোধ করার পরও প্রতিষ্ঠানটি পণ্য স্টকে নেই বলে গ্রাহকের অর্ডারটি বাতিল করে দেয়। কিন্তু পরিশোধকৃত মূল্য গ্রাহকদের সরাসরি ফেরত না দিয়ে সেটি ই-ভ্যালির ওয়ালেটে যুক্ত করে দেয়। যা দিয়ে শুধু ই-ভ্যালি থেকেই পণ্য কেনাকাটা করা যায়। এছাড়া অর্ডারকৃত পণ্যের বদলে অন্য ব্র্যান্ড বা অন্য কোনো পণ্য সরবরাহ করারও অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। তাই এ বিষয়ে তদন্ত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানাতে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরকে অনুরোধ করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন- ফাইল ছবি
জননিরাপত্তা বিভাগকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ই-ভ্যালি তাদের পণ্যের ওপর অস্বাভাবিক হারে অফার দিয়ে থাকে। যা ই-কমার্স ও ই-শিল্পের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া গ্রাহকরা প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ইমেইল, এসএমএস বা কল সেন্টারে যোগাযোগ করলে তারা কোনো ধরনের সাড়া দেয় না। এমনকি অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি প্রতারণার সঙ্গেও জড়িত। তাই ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নিতে জননিরাপত্তা বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এনবিআরকে পাঠানো চিঠিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, মূলত ই-ভ্যালি হচ্ছে ই-ভ্যালি ডট কম লিমিটেটের একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালে সংঘ স্মারক (এওএ) অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধিত মূলধন ছিলো মাত্র ৫০ হাজার টাকা। অথচ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই মূলধন ১ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। তাই এই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য এনবিআরকে অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ই-ভ্যালি তাদের পণ্য ক্রয়ের ওপর ১০০, ২০০ বা ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাকের নজরকাড়া অফার দিয়ে থাকে। যার করাণে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে ব্যবসা করা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সুস্থ প্রতিযোগিতা ব্যহত হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউতে পাঠানো চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তাই এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে ই-ভ্যালির ব্যবসা কার্যক্রম পর্যালোচনা করতে ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে ই-ক্যাব। সাত সদস্যের এ কমিটিতে রয়েছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৪ জন শিক্ষক, একজন ই-কমার্স গবেষক, একজন আইন বিশেষজ্ঞ ও ই-ক্যাবের একজন প্রতিনিধি।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.