যুক্তরাষ্ট্রকে ফের চীনের হুঁশিয়ারি

দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের হুঁশিয়ারি দিলো চীন। এই সাগরের পানিসীমা নিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে চীনের যে মতবিরোধ রয়েছে তাকে যুক্তরাষ্ট্র উস্কে দিচ্ছে এবং বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করছে বেইজিং। আমেরিকার এই উস্কানি ওই কৌশলগত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে ‘বিপজ্জনক’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের কৃত্রিম দ্বীপ

আসিয়ান জোটের শীর্ষ সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এ অভিযোগ করার পাশাপাশি ওয়াশিংটনকে হুঁশিয়ারি দেন বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, বেইজিংয়ের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা। যার অনেক কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে চীনের কাছে। তাছাড়া এই অঞ্চলকে ঘিরে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো ও চীনের অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে।

দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ

ওয়াং ই বলেন, এই কৌশলগত স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র উস্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ সব বহিঃশক্তি এই ইস্যুতে উত্তেজনা সৃষ্টি করে তা থেকে ফায়দা নেওয়ার প্রচেষ্টা বন্ধ করবে বলেও আশা করছে চীন।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরের পানিসীমা নিয়ে বিরাজমান মতবিরোধ মেটানোর জন্য যখন চীনসহ আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো সংলাপের মাধ্যমে চেষ্টা করছে, তখন আমেরিকা এসব দেশের মধ্যে মতবিরোধ উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য, প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা নিয়ে চীন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। চীন এই সাগরের বেশিরভাগ অঞ্চলের মালিকানা দাবি করে। তবে মার্কিন সরকার এই দ্বন্দ্বে চীনের বিরুদ্ধে একাধিক দেশকে সমর্থন দিচ্ছে।

দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে বছরে জাহাজ চলাচলের মাধ্যমে যে বাণিজ্য হয়, তা থেকেই বছরে আয় হয় ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফলে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য দিক থেকে এর কৌশলগত গুরুত্ব অনেক।

মার্কিন সরকার আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমায় নৌযান চলাচলের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা দোহাই দিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক উপস্থিতিও জোরদার করেছে। যা কোনোভাবেই মানতে পারছে না চীন। ফলে দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে চীন-মার্কিন সংঘাতের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।