আপনি পড়ছেন

আরবি দোয়া শব্দের অর্থ ডাকা, প্রার্থনা করা, আহ্বান করা। এক হাদিসে দোয়াকে ইবাদতের মূল বা সারাংশ বলা হয়েছে। আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, দোয়াটাই একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। মানুষ যখন বিপদে পড়ে- তখনই আল্লাহর কাছে বিপদ থেকে মুক্তির জন্য, বাঁচার জন্য প্রার্থনার হাত তোলে। যদিও সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করার নিয়ম বা নির্দেশ রয়েছে, কিন্তু মানব প্রকৃতি বা মানুষের মন তখনই দোয়ার জন্য হাত বাড়ায় যখন সে কোনো সংকট বা বিপদে পড়ে।

dowa 1

সুখের দিনে আল্লাহকে ভুলে থাকা অবশ্যই নিন্দনীয়, কিন্তু দুঃখের দিনে প্রভুর কাছে ফিরে আসা, প্রার্থনার হাত তুলে মুনাজাত করা- কোনোভাবেই নিন্দনীয় হতে পারে না।

দোয়ার প্রচলন শুরু হয়েছে পৃথিবীর প্রথম মানুষ হজরত আদম (আ.) এর সময় থেকেই। তিনি যখন ভুল করে দুনিয়ায় নেমে এসেছেন, তখন তিনি উপলব্ধি করলেন, তাঁর এই মহা বিপদ থেকে আল্লাহ ছাড়া বাঁচানোর আর দ্বিতীয় কোনো শক্তি নেই।

তখন তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনার হাত উঠালেন এবং ক্ষমার দোয়া করলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ আদম (আ.) এর সে দোয়া হুবহু তুলে দিয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন নবীদের দোয়া আল্লাহতালা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেছেন। এর মাধ্যমে আল্লাহপাক আমাদের শিখাতে চেয়েছেন- আমাদের দোয়া কেমন হবে। কোরআনের দশটি চমৎকার দোয়া তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য।

رَبَّنَا ظَلَمۡنَآ أَنفُسَنَا وَإِن لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَتَرۡحَمۡنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡخَـٰسِرِينَ

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আমাদের নিজেদের ওপরই জুলুম করেছি। তুমি ক্ষমা না করলে, দয়া না করলে আমরা ধ্বংস হয়ে যাব।’ সূরা আরাফ, আয়াত ২৩।

رَّبِّ ٱغۡفِرۡ وَٱرۡحَمۡ وَأَنتَ خَيۡرُ ٱلرَّٲحِمِين

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক! আমায় ক্ষমা করো! আমায় দয়া করো! তুমিই সত্যিকার দয়াময়!’ সূরা মুমিনুন, আয়াত ১১৮।

رَ‌بَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَ‌بَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرً‌ا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَ‌بَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ‌ لَنَا وَارْ‌حَمْنَا ۚ أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْ‌نَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِ‌ينَ

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের যদি ভুল বা ত্রুটি হয়, সেজন্যে আমাদের পাকড়াও কোরো না। হে প্রভু! আমাদের পূর্বসূরিদের ওপর যে-রূপ গুরুভার অর্পণ করেছিলে, আমাদের ওপর তেমন ভার চাপিয়ে দিও না। আমাদের ওপর সাধ্যাতীত কোনো দায়িত্ব দিও না। আমাদের ক্ষমা করো। দয়া করো। তুমিই আমাদের প্রভু। সত্য অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করো।’ সূরা বাকারাহ, আয়াত, ১৮৬।

رَ‌بَّنَا اغْفِرْ‌ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَ‌افَنَا فِي أَمْرِ‌نَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْ‌نَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِ‌ينَ

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পাপমোচন করো। সকল বাড়াবাড়ির জন্যে আমাদের ক্ষমা করো। বিশ্বাসে দৃঢ় রাখো। সত্য অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে বিজয়ে আমাদের সাহায্য করো।’ সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৪৭।

munajat

رَّ‌بَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِي لِلْإِيمَانِ أَنْ آمِنُوا بِرَ‌بِّكُمْ فَآمَنَّا ۚ رَ‌بَّنَا فَاغْفِرْ‌ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ‌ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَ‌ارِ‌

অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা একজন আহ্বানকারীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তোমার প্রতি ঈমান এনেছি। অতএব তুমি আমাদের সকল গুনাহ মাফ করো। সকল দোষত্রুটি মুক্ত করো এবং সৎকর্মশীলদের কাতারে আমাদের শেষ পরিণতি দাও। সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৯৩।

رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক! কর্মফল দিবসে আমাকে, আমার মা-বাবাকে এবং সকল বিশ্বাসীকে তুমি ক্ষমা করে দিও!’ সূরা ইবরাহিম, আয়াত ৪১।

أَنتَ وَلِيُّنَا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۖ وَأَنتَ خَيْرُ الْغَافِرِينَ

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমিই আমাদের রক্ষক। তুমি ক্ষমা করো। দয়া করো। তুমিই শ্রেষ্ঠ ক্ষমাশীল।’ সূরা আরাফ, আয়াত, ১৫৫।

رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ঈমান এনেছি, তুমি আমাদের ক্ষমা করো, তুমি আমাদের দয়া করো। তুমিই করুণানিধান।’ সূরা মুমিনুন, আয়াত ১০৯।

رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের ও বিশ্বাসী অগ্রণীদের তুমি ক্ষমা করো। বিশ্বাসীদের ব্যাপারে সকল প্রকার হিংসা-বিদ্বেষ থেকে আমাদের অন্তরকে মুক্ত রাখো। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি অতিস্নেহশীল, পরমদয়ালু।’ সূরা হাশর, আয়াত ১০।

رَّبِّ اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيْتِيَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَلَا تَزِدِ الظَّالِمِينَ إِلَّا تَبَارًا

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে, আমার পিতামাতাকে এবং বিশ্বাসী হয়ে আমার ঘরে আশ্রয়গ্রহণকারীদের এবং সকল বিশ্বাসী নরনারীকে ক্ষমা করো। আর জালেমদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করো।’ সূরা নূহ, আয়াত ২৮।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর