দরজাবিহীন যে গ্রাম

সমস্ত গ্রামে কোনো বাড়িতেই দরজা নেই। এমনকি গ্রামের একমাত্র যে সরকারি ব্যাংক, সেটির কাঁচের দরজাতেও কোনো তালা লাগানোর দরকার পড়ে না। এমনই এক গ্রাম রয়েছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় মহারাষ্ট্র প্রদেশে। গ্রামের নাম শনি শিংনাপুর।

দরজা যেহেতু নেই, তাহলে কী চোরের উৎপাতও নেই? বিস্তারিত জানা গেলো ওই গ্রামের অধিবাসীদের সাথে কথা বলে।

তারা জানালেন, এই গ্রামে কোনো চুরি-ডাকাতি হয় না। এর কারণ তারা বিশ্বাস করেন, এই গ্রামে চুরি করলে 'শনি দেবী'র কোপানলে পড়তে হবে। আর এই বিশ্বাস থেকেই গ্রামের কোনো বাড়িতেই দরজা লাগানোর দরকার পড়ে না।

গ্রামের গৃহবধু জয়শ্রী গাড়ে জানালেন, খোলা ঘরের উম্মুক্ত স্থানে নিশ্চিন্ত মনেই টাকা-পয়সা, গয়নাগাটি রেখে বাইরের কাজে যান তারা। যুগের পর যুগ বংশ পরম্পরায় এটি চলে আসছে।

জয়শ্রী বলেন, প্রায় ৩০০ বছর আগে এই গ্রামে একবার বন্যা হয়েছিলো। তখন লোহা ও পাথর দিয়ে এই শনি দেবীর স্তম্ভটি বানানো হয়। এরপর থেকে গ্রামে আর কোনো চুরি হয় না। সবাই শনি দেবীকে ভয় পায়। মনে করে, চুরি করলে দেবীর কোপানলে পড়তে হবে। বংশ পরম্পরায় এই দেবীর ভয় তাদের মধ্যে কাজ করছে।

ইউসিও ব্যাংকের কর্মকর্তা নগেন্দ্র সেহওয়াত জানান, অনেক বছর আগে স্বপ্নে শনি দেবী গ্রামের বাসিন্দাদের দেখা দেন। স্বপ্নে দেবী বলেছিলেন, তিনিই আমাদের সব রক্ষা করবেন। এরপর থেকে গ্রামে এই দরজাবিহীন অবস্থা।

গ্রামের একটি হোটেলের ব্যবস্থাপক অমিত শর্মা বলেন, এটিই এই দেবীর বিশেষত্ব। তিনিই আমাদের এই গ্রামের অভিভাবক।