আপনি পড়ছেন

পুরো বিশ্বজুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য বাংলাদেশি। তারা ওই দেশগুলোতে বেশ সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন। গড়ে তুলেছেন ব্যবসা-বাণিজ্য, বাড়ি-গাড়ি। পাশাপাশি সততার সঙ্গে কাজ করে অর্জন করেছেন সুনাম। তাদের মধ্যেই একজন জার্মান প্রবাসী যুবরাজ তালুকদার। তিনি সেখানকার বন শহরে বসবাস করেন এবং আবাসন খাতের একজন সফল ব্যবসায়ী।

yubraz talukder german citizenযুবরাজ তালুকদার

তবে এই খাতে ব্যবসা করলেও তিনি কোনো বাড়ি কিংবা জমি বিক্রি করেন না, শুধু কিনেন। এরপর সেগুলো নিজের মতো করে সাজিয়ে ভাড়া দিয়ে দেন। এভাবেই মাত্র ৫০ বছর বয়সে বন শহরের শতাধিক বাড়ির মালিক বনে গেছেন যুবরাজ তালুকদার।

ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বাংলাদেশি জানান, বড় কোনো বিনিয়োগ নিয়ে এই খাতে ব্যবসা শুরু করেননি। যা গড়েছেন সম্পূর্ণ নিজের কামানো টাকায় এবং চেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে।

তিনি জানান, ১৬ বছর বয়স থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয় একটি হোটেল কাজ করতেন। সেখান থেকে পাওয়া অর্থ এবং পরবর্তীতে ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে চাকরি করে যে বেতন পেয়েছিলেন, সেগুলো জমাতেন। কারণ এখান থেকে কোনো টাকাই তার বাবা নিতেন না, তাই সবগুলোই সঞ্চয় করতে পেরেছেন। সেই টাকা দিয়েই ১৯৯১ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে নিলামের মাধ্যমে একটি বাড়ি কিনেন। যার খরচ পড়েছিল সাড়ে ৬ হাজার ইউরো।

যুবরাজ তালুকদার মূলত পুরনো ঘরবাড়ি বিভিন্ন ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিলামে ক্রয় করেন এবং পরবর্তীতে সেগুলো সংস্কার করে ভাড়া দেন। বিশেষ করে, ১৯৬০-১৯৭০ সালের দিকে বানানো বাড়িগুলো তিনি কিনেন। এক্ষেত্রে এক হাজার বর্গফুটের একটি বাড়ি সংস্কার করতে ব্যয় হয় নূন্যতম ৪০ হাজার ইউরো। আর সেই কাজ কোনো কোম্পানিকে দিয়ে না করিয়ে নিজেই করেন। তার কর্মী আছে ছয় জন, তারাই এ কাজে সব ধরনের সহায়তা করেন। এতে অর্ধেক খরচ বেঁচে যায়।

মাঝে-মধ্যে ২০০-৩০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বাড়ি কিনে সেগুলো বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে সংস্কার করেন। এগুলো বেশি পুরনো হওয়ায় বাড়ির বাইরের অংশের ডিজাইনে কোন পরিবর্তন করা যায় না। শুধু ভেতরটা নিজেদের মতো করে বদলে নেয়া যায়। আর বাংলাদেশি এই প্রবাসী সেটাই করেন। তারপর তা ভাড়া দিয়ে দেন।

আবাসন খাতের পাশাপাশি এই ব্যবসায়ী কোলন-বন বিমানবন্দরের কাছে একটি ইতালীয় রেস্তোরাঁও চালু করেছেন। এ ছাড়া কোলনের একটি আদালতে অনারারি জাজ হিসেবেও নিয়োগ পেয়েছেন।