এক টুইটের মাধ্যমে রাতারাতি ভাগ্য বদলে গেল ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার। ছিলেন অভাব-অনটনে হতাশাগ্রস্ত হয়ে কোনোরকমে দিন অতিবাহিত করা একজন হতদরিদ্র মানুষ, আর এখন হয়ে উঠলেন লোকাল সেলিব্রিটি।

baba ka dhabaগ্রাহকদের খাবার সরবরাহ করছেন ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা কান্ত প্রসাদ

গল্পটি ভারতের রাজধানী দিল্লির বাসিন্দা কান্ত প্রসাদের। তিনি ও তার স্ত্রী বাদামি দেবী দক্ষিণ দিল্লির মালভিয়া এলাকায় 'বাবা কা ধাবা' নামে একটি ছোট্ট খাবারের দোকান চালান। মহামারির প্রাদুর্ভাবের আগে তাদের ব্যবসা ভালোই চলছিল। কিন্তু লকডাউনের পর সবকিছু পাল্টে যায়। দৈনিক যা বেচাকেনা হয় তা দিয়ে একদিনের খাবারই জোটে না, পথে বসার উপক্রম হয়।

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সম্প্রতি তার দোকানে খাবার খেতে আসেন ফুড ব্লগার গৌরব ওয়াসন। তখন তার কাছে নিজেদের অভাব-অনটনের কথা জানান কান্ত প্রসাদ। কান্নারত অবস্থায় কষ্টের কথা জানিয়ে বলেন, দৈনিক যা খাবার তৈরি করি, তার সবই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কোনো ক্রেতা আসে না।

এরপরই একটি ভিডিও বানান গৌরব ওয়াসন এবং তা নিজের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন। যথেষ্ট সাড়া পড়ছে দেখে পরে ভিডিওটি টুইটারেও শেয়ার দেন। সেখান থেকে এক মহিলা রি-টুইট করে লিখেন, 'ভিডিওটি দেখে তার হৃদয় ভেঙে গেছে। পাশাপাশি দিল্লির মানুষকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'বাবা কা ধাবা' দেখতে আসুন এবং কান্ত প্রসাদ ও তার স্ত্রীকে সহায়তা করুন।'

সময়ের ব্যবধানে ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভারতীয় ক্রিকেটার ও বলিউড সেলিব্রেটিদের দেখার আগেই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এটি সাড়ে চার মিলিয়ন মানুষ দেখে ফেলে। এরপর ভিডিওটি রি-টুইট করেন অভিনেত্রী সোনম কাপুর এবং ক্রিকেট তারকা রবিচন্দন অশ্বিন। এমনকি দিল্লির জনপ্রিয় অনলাইন খাবার সরবরাহকারী অ্যাপ 'জোমাটো' এক টুইটে জানায়, 'বাবা কা ধাবা' এখন থেকে তাদের অ্যাপের তালিকাভুক্ত দোকান থাকবে। পাশাপাশি এমন আরো স্টল থাকলে সেগুলোর তথ্য দিতে অনুরোধ জানানো হয়। যেন তাদেরও সহায়তা করা যায়।

baba ka dhaba1ভিডিও ভাইরালের পর থেকেই কান্ত প্রসাদের দোকানের সামনে এভাবেই গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন লেগে আছে

ভিডিওতে বৃদ্ধা প্রসাদ জানান, তিনি ও তার স্ত্রী প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৬টা থেকে মেনু প্রস্তুত শুরু করেন এবং সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে তা শেষ করেন। বিভিন্ন অফিসের কর্মী-শ্রমিক থেকে শুরু করে আশপাশের অসংখ্য মানুষ এখান থেকে সকালের নাস্তা করতেন। কিন্তু মহামারির কারণে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হন। লকডাউনের পর দোকান খুললেও ক্রেতা নেই।

তার স্ত্রী বাদামি দেবী জানান, তারা মাঝেমধ্যে বিক্রি না হওয়া খাবার ঘরে ফেরত নিয়ে যান। এমনকি কোনো কোনো দিন নতুন করে খাবার রান্না করার মতো পর্যাপ্ত টাকা থাকে না।

তবে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে স্টলে গ্রাহকদের স্রোত দেখা গেছে। হঠাৎ করেই বিখ্যাত হয়ে যাওয়া এই স্টলটির সামনে এসে অনেকেই সেলফি তুলছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা পোস্ট করছেন। বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এসে বৃদ্ধা দম্পত্তির সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। সব মিলিয়ে এখন তারা লোকাল সেলিব্রিটি বনে গেছেন।

বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯০ সাল থেকেই এই দম্পতি দক্ষিণ দিল্লির মালভিয়া এলাকায় তাদের 'বাবা কা ধাবা' চালাচ্ছেন। এখানে ঘরে রান্না করা সম্পূর্ণ ফ্রেস খাবার পরিবেশন করা হয়। মেনুতে রয়েছে- পরটা, উত্তর ভারত জনপ্রিয় গোলাকার মাখনের রুটি, বিভিন্ন ধরনের গ্রেভ, ভাত, ডাল এবং মসুরের ঘন স্যুপ। মাত্র ৫০ রুপির মধ্যেই এসব খাবার পাওয়া যায়।

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.