পশ্চিমা যুবকদের উদ্দেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বার্তা

ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় কয়েকটি দেশে ইসলাম ধর্ম ও তাদের নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর প্রতি অবমাননাকর নানা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে মুসলিম বিশ্বসহ কয়েকটি অমুসলিম দেশও। এমতাবস্থায় ইউরোপ-আমেরিকার যুবকদের ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্যকে সঠিকভাবে উপলব্ধির পরামর্শ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।

সিএনএনের খবরের একটি দৃশ্য

এ খবরটি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম। এ তালিকায় কাতারের আল জাজিরাসহ মুসলিম দেশগুলোর সংবাদমাধ্যম তো রয়েছেই। আরবি, ফার্সির পাশাপাশি ইংরেজি ও ফরাসি ছাড়াও বেশ কয়েকটি ভাষায় বুধবার দেয়া খামেনির ওই বক্তব্য প্রচার করে ইরান।

সিএনএনের খবরে বলা হয়, ইসলাম অবমাননাকারীদের পক্ষ নেওয়ায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোর তীব্র সমালোচনা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। ব্যঙ্গচিত্র বা বিকৃত লেখনি দিয়ে পবিত্র ইসলাম ধর্মকে মূল্যায়ন না করতে ফ্রান্সসহ পাশ্চাত্যের যুবকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

পাশ্চাত্য দেশগুলোর সমালোচনা করে খামেনি বলেন, তারা নিজেদের তৈরি সন্ত্রাসীদের ইসলামের রোল মডেল হিসেবে প্রচার করছে। ইসলাম অবমাননাকর এমন প্রচার-প্রোপাগান্ডায় কান না দিতে এবং এতে বিভ্রান্ত ও প্রভাবিত না হতে শিক্ষিত পশ্চিমা যুবকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

নিউইয়র্ক ম্যাগাজিন বলেছে, সামাজিকমাধ্যমে পাশ্চাত্যের যুবকদের কাছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যে বাণী পৌঁছে দিয়েছেন, তা প্রমাণ করছে বিশ্ব পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখেন তিনি। আর মার্কিন সাময়িকী ‘ফরেন পলিসি’ লিখেছে, ইরানি সর্বোচ্চ নেতা বরাবরই বলে আসছেন তাদের শত্রুতা মার্কিন জনগণের সাথে নয়, রাজনীতিকদের সঙ্গে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁন

সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদদে চলছে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা.) কে অবমাননার বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ। এর মধ্যেই কয়েকদিন আগে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করা হয়। স্যামুয়েল প্যাটি নামক এক ফরাসি শিক্ষক ক্লাসে এমন একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করলে তাকে হত্যা করে একজন সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিলে কার্টুন প্রকাশের পক্ষ নিয়ে ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য মুসলমান সম্প্রদায়কে দায়ী করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁন। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে মহানবী (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ অব্যাহত রাখার ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘোষণা দেন তিনি। এ ছাড়াও তার সরকার হিজাব নিষিদ্ধ, মসজিদ বন্ধ করাসহ ইসলাম-বিরোধী আইন প্রণয়নে হাত দিয়েছেন বলেও জানা যায়।

এর বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ব মুসলিম নেতারাও সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছেন। দেশে দেশে চলছে ফরাসি পণ্য বয়কটের আন্দোলন এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁনের বিরুদ্ধে চলছে নিন্দা ও প্রতিবাদ।