গির্জায় হামলার পর ঠিকই মুখ খুললো জার্মানি

ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদদে চলা ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা.) এর অবমাননার বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো অব্যাহত আছে। এ ক্ষেত্রে ধর্মীয় স্বাধীনতার নীতি নিয়ে চলার দাবি করা জার্মানি একেবারেই নিশ্চিত রয়েছে। তবে এবার ফ্রান্সের একটি গির্জায় ছুরিকাঘাতের ঘটনায় সরব হয়েছে দেশটি।

ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার

নিস শহরের ওই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আজ শুক্রবার জার্মান রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেছেন, এখন কেবলই নিসের মৃতদের পরিবারের কথাই ভাবছেন তিনি, অন্য কিছু নয়।

ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনার জবাবে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো কখনোই উচিত নয়। ঘৃণার বিপরীতে পাল্টা ঘৃণা কোনো সমাধান হতে পারে না।

সহিংসতা-বিরোধী লড়াইয়ের বিষয়ে জার্মান রাষ্ট্রপতি বলেন, এই ধরনের হিংস্র আচরণ কেবল ফ্রান্সে নয়, গোটা ইউরোপেই দেখা দিয়েছে। এর পেছনের ইসলামী মনোভাবের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া উচিত।

পারস্পরিক সম্মান সমাজের অংশ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এই ধরনের লড়াইয়ের ক্ষেত্রেও উদারতা বজায় রাখতে হবে, এ থেকে সরে গেলে চলবে না। এটাই এখন আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

নিসে হামলার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ

ফরাসি কর্তৃপক্ষ বলছে, নিসের গির্জার সামনের ওই ছুরিকাঘাতে তিন জন নিহত হয়, আটক করা হয় হামলাকারীকে। ২১ বছর বয়সী ওই মুসলিম ব্যক্তি তিউনিশিয়ার নাগরিক, তিনি ইতালি হয়ে ফ্রান্সে প্রবেশ করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদদে চলছে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা.) কে অবমাননার বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ। এর মধ্যেই কয়েকদিন আগে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করা হয়। স্যামুয়েল প্যাটি নামক এক ফরাসি শিক্ষক ক্লাসে এমন একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করলে তাকে হত্যা করে একজন সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিলে কার্টুন প্রকাশের পক্ষ নিয়ে ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য মুসলমান সম্প্রদায়কে দায়ী করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁন। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে মহানবী (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ অব্যাহত রাখার ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘোষণা দেন তিনি। এ ছাড়াও তার সরকার হিজাব নিষিদ্ধ, মসজিদ বন্ধ করাসহ ইসলাম-বিরোধী আইন প্রণয়নে হাত দিয়েছেন বলেও জানা যায়।

এর বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ব মুসলিম নেতারাও সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছেন। দেশে দেশে চলছে ফরাসি পণ্য বয়কটের আন্দোলন এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁনের বিরুদ্ধে চলছে নিন্দা ও প্রতিবাদ।