ফের লকডাউনে ব্রিটেন

ব্রিটেনে ফের এক মাসের লকডাউন ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সম্প্রতি তার উপদেষ্টারা করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করে তাকে কঠোর লকডাউন আরোপের পরামর্শ দেন। এর পরই তিনি নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করলেন।

বরিস জনসন

এদিকে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এবারের ক্রিসমাস অন্য ধরনের হতে পারে। লকডাউন দিয়ে আমরা অন্তত ওই দিন পরিবারগুলোকে মিলিত হতে দিতে পারি কি না, সে চেষ্টা থাকবে।

ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসন বলেন, সকল রেস্তোরাঁ, পানশালা, ব্যায়ামাগার বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া দৈনন্দিন প্রয়োজনে জরুরি নয়- এমন দোকান-পাটও এক মাসের জন্য বন্ধ থাকবে।

ব্রিটেনে করোনা পরিস্থিতি ফের ভয়াবহ হচ্ছে

তবে আগের লকডাউনের চেয়ে এবার খানিকটা পার্থক্য থাকছে। কারণ এবারের লকডাউনে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হচ্ছে না। আসছে ২ ডিসেম্বরের পর পর লকডাউন শিথিল করা হবে বলেও জানান জনসন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বরিস জনসনের কয়েকজন উপদেষ্টা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, আগামীতে করোনার কারণে যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন গড়ে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে কঠোর লকডাউন দিতে বলেন তারা।

সে প্রসঙ্গে জনসন বলেন, কোনো দায়িত্ববান প্রধানমন্ত্রী এমন পূর্বাভাস উপেক্ষা করতে পারে না।

এ সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হবে, আর কাকে দেওয়া হবে না, কে অক্সিজেন পাবে আর কে পাবে না, অথবা কে মরবে আর কে বাঁচবে- চিকিৎসকদের এসব কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।

এ ছাড়া লকডাউনের কারণে দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর যে প্রভাব পড়বে, সেজন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ৮০ শতাংশ কর্মীর বেতন পরিশোধের বিষয়টি নভেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করার সিদ্ধান্তের কথা জানান বরিস জনসন।

নতুন করে আরোপিত লকডাউন অনুযায়ী, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয়, খাদ্যদ্রব্য, চিকিৎসাজনিত কারণে ব্যায়াম করার জন্য ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালনের জন্য লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারবে।

নিয়মিত যত্ন প্রয়োজন এবং শারীরিকভাবে নাজুক এমন ব্যক্তিদের সেবা করার জন্যও ঘর থেকে বের হওয়া যাবে। তবে ঘরের ভেতর এবং বাগানেও কোনো ধরনের ব্যক্তিগত আয়োজন করা যাবে না।

কোন ব্যক্তি বাড়ির বাইরে গিয়ে অন্য পরিবারের এক ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।

সকল ধরনের বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। কারখানায় উৎপাদন, ভবন নির্মাণের কাজ চালানো যাবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২২ হাজার মানুষ নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হচ্ছে। আর প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।