মার্কিন নির্বাচন: কী ভাবছে চীন, রাশিয়া ও ইসরায়েল

রাত পোহালেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এর পরই জানা যাবে কে হতে চলেছেন বিশ্বের পরবর্তী অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনায়ক। রিপাবলিকান প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কি দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে থেকে যাচ্ছেন, নাকি প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন।

অগ্রিম ভোট দিচ্ছেন মার্কিনিরা

এ প্রশ্নের উত্তর কালই জানা যাবে। তার আগে চলুন জেনে নেয়া যাক যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া ও চীন এ ব্যাপারে কী ভাবছে? আবার ট্রাম্প প্রশাসনের বন্ধু বলে পরিচিত ইসরায়েল কী ভাবছে? তারা কি বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবারও ক্ষমতায় দেখতে চাচ্ছে, নাকি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন বিজয়ী হলে তাদের জন্য সুবিধা হবে।

অবশ্য এক ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন একই নীতিতে একমত। তারা উভয়ই চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চান। নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণায় বার বার এ কথা উচ্চারণও করেছেন। তবে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী এ দিক দিয়ে যেন কিছুটা কঠোর। চীনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ট্রাম্পকে দোষারোপ পর্যন্ত করেছেন। বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেইজিং যেসব কার্যকলাপ করছে সেটার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, নির্বাচনে যেই জিতুক, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সম্পর্কের ভাঙন আর থামবে না। আবার চীনারাও বলছেন, ট্রাম্প বিজয়ী হলেই বরং তাদের জন্য ভালো। কারণ চীন নীতিতে বাইডেন ট্রাম্পের চেয়ে আরো বেশি কঠোর। ফলে তিনি জয় পেলে বেইজিং-ওয়াশিংটনের সম্পর্কের আরো অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

রিপাবলিকান প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন

রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব সময়ই এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ লেগে থাকে। তবুও ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পকে বিজয়ী করার ক্ষেত্রে মস্কোর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে থাকে সিআইএ। তাই এবার ভুয়া তথ্য ছড়ানো বন্ধে শুরু থেকেই কঠোর অবস্থানে মার্কিন কর্মকর্তারা। অবশ্য রুশ নাগরিকরা এসব নিয়ে ভাবছেন না। নির্বাচনে যেই জিতুক তাদের কিছু যায় আসে না বলেই অভিমত অধিকাংশের। সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের চাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় আসুক। কারণ ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি তেল আবিবের জন্য এক ধরনের আশির্বাদস্বরূপ। ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাকিকরণ চুক্তি করেছে। এ ছাড়া সুদানও চুক্তি করতে রাজি হয়েছে। এসব সম্ভব হয়েছে একমাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার কারণেই।

আর যদি জো বাইডেন বিজয়ী হন, তাহলে ইসরায়েল আগের মতো আর সুবিধা নাও পেতে পারে। কারণ সৌদি আরবকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্র হিসেবে মনে করেন তিনি। ফলে রিয়াদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাকিকরণ নিয়ে তেল আবিব যে স্বপ্ন দেখছে, তা নাও পূরণ হতে পারে। সবকিছু বিবেচনায় ট্রাম্প প্রশাসনকেই আবার চায় নেতানিয়াহু সরকার।