তুরস্কের সঙ্গে আরেক দফা উত্তেজনা বাড়ালো ফ্রান্স

সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে আঙ্কারা ও প্যারিসের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। দুই দেশের উত্তেজনাকর সম্পর্কে সর্বশেষ ঘি ঢেলেছে প্যারিস, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রদর্শন ও ফরাসি সরকার কর্তৃক ইসলাম বিদ্বেষ ছাড়ানোর মাধ্যমে। এমনই প্রেক্ষাপটে এবার তুরস্কের একটি গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো ফ্রান্স। যা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

গ্রে উলভস গোষ্ঠী

ফরাসি সরকারের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার ফ্রান্সে তুরস্কের 'গ্রে উলভস' গোষ্ঠীর সব ধরনের কার্যকলাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দলটি ঘৃণা ছড়াচ্ছে এবং সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

'গ্রে উলভস' কে চরমপন্থী অতি-জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী আখ্যা দিয়ে ফরাসি সরকার জানিয়েছে, তুরস্কের এই গোষ্ঠী চরম সহিংস কাজে লিপ্ত। তারা সহিংস হুমকি দিচ্ছে এবং আর্মেনীয়দের মধ্যে ঘৃণা ছড়াচ্ছে। এমনকি গত সপ্তাহে লিয়ঁ শহরে আর্মেনীয়দের একটি স্মারকের মর্যাদাহানি করেছে।

১৯১৫ সালে গণহত্যায় নিহত আর্মেনীয় মানুষদের স্মরণে তৈরি করা স্মারকটিতে তুর্কি গোষ্ঠীটি 'গ্রে উলফ', 'আরটিই' ও তুরস্কপন্থী বিভিন্ন স্লোগান লিখে দিয়েছে। এর মধ্যে 'আরটিই' এর পূর্ণরুপ হচ্ছে রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্র্যোঁন

‘গ্রে উলভস’ হলো তুর্কি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলাপমেন্ট পার্টির শরিক দল ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টির একটি শাখা সংগঠন। ১৯৬০ ও ৭০ এর দশকে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয় এবং পরবর্তী বছরগুলোতে তারা কমিউনিস্ট ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংস কার্যকলাপ চালায়।

এদিকে, ফরাসি সরকারের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তুরস্ক। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ‘গ্রে উলভস’ বলে তাদের কোনো গোষ্ঠী নেই এবং ফ্রান্স মনগড়া একটি গোষ্ঠী তৈরি করেছে। এর মধ্য দিয়ে তারা সেখানে অবস্থানরত তুর্কি মানুষের স্বাধীনতা, জমায়েতের অধিকার ও মত প্রকাশের অধিকারকে হরণ করতে চাইছে। তাদের রক্ষা করতে হবে। অথচ ফ্রান্সে তুরস্কের লোকদের ওপর যারা আক্রমণ, উস্কানি ও হুমকি দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

ফরাসি সরকার এখন পুরোপুরি মার্কিন প্রভাবে কাজ করছে অভিযোগ করে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, তারা এখন দুমুখো নীতিতে কাজ করছে। জঙ্গি গোষ্ঠী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স ফোর্সসহ অন্য দলগুলোকে সমর্থন করলেও বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।