একেশ্বরবাদীদের সম্মিলনে ‘হাউজ অব ওয়ান’

মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টান। একেশ্বরবাদী এই তিন ধর্মের মানুষের জন্য নির্মাণ করা হবে একটি উপাসনালয়। যেখানে তিন সম্প্রদায়ের ধর্মালম্বীরাই এক ছাদের নিচে দাঁড়িয়ে নিজ সৃষ্টিকর্তার প্রার্থনা করতে পারবেন। খবর ডয়েচে ভেলে।

‘হাউজ অব ওয়ানে’র নকশা

‘হাউজ অব ওয়ান’ নামের এই উপাসনালয়টি নির্মাণ করা হবে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের পুরান শহরের ঠিক মাঝখানে। আগামী বছরের শুরুতেই ৪০ মিটার উঁচু এ ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আর ওই বছরই শেষ করা হবে নির্মাণ কাজ।

হাউজ অব ওয়ান ফাউন্ডেশনের প্রশাসনিক পরিচালক রোলান্ড স্টোলটে জানান, উপাসনালয়টি নির্মাণের জন্য গত প্রায় এক দশক ধরে তিন ধর্মের প্রতিনিধিরা আলোচনা করছেন। বিভিন্ন সময় বেশ কয়েকবার প্রস্তুতি নিয়েও পেছাতে হয় নির্মাণ কাজ। সর্বশেষ চলতি বছর ভবনটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হলেও বৈশ্বিক নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। তবে এবার এটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। আগামী জানুয়ারিতেই মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করা হবে।

এই জায়গায় তৈরি হবে ‘হাউজ অব ওয়ান’

মূলত ভবনটি যেখানে নির্মাণ করা হবে, সেখানে আগে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের একটি গির্জা ছিলো। পেট্রিকির্শে নামের ওই গির্জাটি ৭০০ বছর দাঁড়িয়ে থাকার পর শীতল যুদ্ধের সময় ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর থেকে জায়গাটি খালিই ছিল। পরে ইমাম কাদির সানচি, প্রোটেস্ট্যান্ট যাজক গ্রেগর হোব্যার্গ ও রাব্বি টোফিয়া বেন-চোরিন যৌথভাবে সেখানে একটি উপাসনালয় নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

জানা যায়, উপসনালয়টির ঠিক মাঝখানে থাকবে একটি বৈঠকখানা। যেখানে তিন ধর্মের মানুষরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে পারবে। আর এই বৈঠকখানাটি ঘিরেই মুসলিম ধর্মালম্বীদের প্রার্থনার জন্য থাকবে মসজিদ, ইহুদিদের জন্য থাকবে সিনাগগ ও খ্রিস্টানদের জন্য থাকবে গির্জা।

উপাসনালয়টি তৈরি করতে ব্যয় হবে প্রায় ৪৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৩৫ কোটি টাকা। ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে ইতোমধ্যে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগার করা হচ্ছে। ভবনটি নির্মাণে গঠন করা হয়েছে ২০ সদস্যের একটি ট্রাস্টি বোর্ড। যার প্রধান করা হয়েছে বার্লিনের মেয়র মিকায়েল ম্যুলারকে।