আমি প্রথম, কিন্তু শেষ নই

ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ইতিহাস গড়েছেন কমলা দেবী হ্যারিস। দেশটির ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী ভাইস-প্রেসিডেন্ট। এত শীর্ষ পদে এই প্রথম কোনো মার্কিন নারী নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। সেইসঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গ ও এশিয়ান-আমেরিকান নারী হিসেবেও প্রথম ঘটনা এটি।

নবনির্বাচিত মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা দেবী হ্যারিস

নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে নবনির্বাচিত মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট বলেন, হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে আমিই প্রথম মহিলা, কিন্তু আমিই শেষ নই। মার্কিন নারীদের রাজনৈতিক সাফল্য আর সীমাবদ্ধ থাকবে না।

এই জয়কে 'ঐতিহাসিক' আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি ছোট্ট মেয়ে দেখতে পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র একটি সম্ভাবনাময় দেশ। এক শতক আগেও এই দেশে নারীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ ছিল না। এরপর থেকে যে নতুন ধারার সূচনা হয়েছিল তা এত তাড়াতাড়ি শেষ হবে না।

জাতি এবং বর্ণের সীমারেখা পেরিয়ে শ্বেতাঙ্গ, আফ্রো-আমেরিকান, এশীয় বংশোদ্ভূত এবং দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা অভিবাসী পরিবারের ছোট্ট মেয়েরাও স্বপ্ন দেখো, যোগ করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা দেবী হ্যারিস।

এ সময় তার প্রয়াত মা গোপালন শ্যামলাকে স্মরণ করেন তিনি। বলেন, সম্ভবত এমন মুহূর্তের কথা আমার মা কল্পনাও করেননি।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা দেবী হ্যারিস, শনিবার রাতে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর

যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত অবিচারের ইতিহাস সুদীর্ঘ। যেখানে স্থানীয় আমেরিকানরা অভিবাসীর সন্তানদের, কৃষ্ণাঙ্গদের ঠিক নিজেদের মানুষ মনে করেন না, সেখানে প্রথম নারী ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ী হয়ে ইতিহাসে এক দারুণ ঝাঁকুনি দিয়েছেন কমলা হ্যারিস।

নিজের নির্বাচনী প্রচারণার সময় জাতিগত বিদ্বেষ ও যৌন সহিংসতামূলক আচরণের শিকার হয়েছেন তিনি। এমনকি নির্বাচনে হেরে যাওয়া রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প কমলা হ্যারিসের নাম শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নজিরবিহীন হিংসা প্রকাশ করেন।

জ্যামাইকান বাবা ও ভারতীয় মায়ের সন্তান কমলা হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছরই জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময় একটি অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে। দুই দেশের বাবা-মায়ের সন্তান হ্যারিস যেনো এই সত্যের প্রতিরূপ হয়েই নতুন ইতিহাস গড়লেন।

কমলা হ্যারিস এর আগে স্যান ফ্রান্সিসকোর অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে মাত্র দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে তিনি সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।