ট্রাম্প শিবিরের প্রত্যাশা, নির্বাচনের ফল পাল্টে যাবে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক টুইটকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছিল, গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। ওই টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘বাইডেন জয়ী হয়েছেন, কারণ ভোটে কারচুপি হয়েছে’।

গল্ফ ক্লাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প

তবে সেটাকে শুধু কথার কথাই মনে হচ্ছে। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প বা তার শিবির পরাজয় স্বীকার করার অবস্থায় নেই। বরং ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি দাবি করেছেন, তাদের ভোট জালিয়াতির প্রমাণ আছে এবং নির্বাচনের ফল পাল্টে যাবে বলেই মনে করছেন তারা।

গতকাল রোববার ভার্জিনিয়ার গলফ ক্লাবে কাটিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ সময় একের পর এক টুইট করেছেন ট্রাম্প। তবে তাতে স্পষ্ট করে নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেওয়া কিংবা বাইডেনের জয়ের ব্যাপারে কিছু বলেননি তিনি। শুধু বলেছেন, ‘বাইডেন জিতেছেন, কারণ ভোট কারচুপি হয়েছে’।

রুডি জুলিয়ানি

তবে নিউইয়র্ক পোস্টের সাংবাদিক মাইকেল গুডউইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে, সেটা সবাই জানে।

শতভাগ ভোট জালিয়াতি হয়েছে দাবি করে ট্রাম্প বলেন, ৭ কোটি ৪ লাখের বেশি ভোট পেয়ে তিনি নির্বাচনে হারতে পারেন না।

তিনি কি কখনো পরাজয় মেনে নেবেন- গুডউইনের এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, দেখি সবকিছু কীভাবে যায়।

জো বাইডেন

তাছাড়া একাধিক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প পরাজয় মেনে নেওয়ার কোনো আভাস দেননি। উল্টো তিনি দাবি করেছেন যে, কানাডাভিত্তিক ডমিনিয়ন নামের সফটওয়্যারের মাধ্যমে যেসব অঙ্গরাজ্যে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে, সেসব জায়গাতেই ভোট জালিয়াতি হয়েছে।

ট্রাম্পের অভিযোগ, ওই সফটওয়্যার কোম্পানিটির মালিকপক্ষের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের যোগাযোগ রয়েছে। এমনকি ডেমোক্র্যাটদের প্রচার তহবিলে অর্থও দিয়েছে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি বলছেন, নির্বাচনের বর্তমান পাল্টে যাবে। কারণ ফলাফল পাল্টে দেওয়ার মতো তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে আছে। অবশ্য এসব তথ্য-প্রমাণ এখনই প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।

ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র জুলিয়ানি বলেন, ভোটে কারচুপি করা হয়েছে দুর্নীতির মেশিনের মাধ্যমে। সুইং স্টেট হিসেবে পরিচিত অঙ্গরাজ্যগুলোতে যে ভোট জালিয়াতি হয়েছে, সে ব্যাপারে তাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে। ভোট গণনার সময় রিপাবলিকানদের উপস্থিত থাকতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ তার।

তবে নির্বাচন শেষে ভোট গণনার শুরু থেকেই জালিয়াতির অভিযোগ তুললেও আজ পর্যন্ত কোনো তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারেনি ট্রাম্প প্রশাসন। অন্যদিকে, দেশটির নির্বাচনী কর্মকর্তা, ইউরোপীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থা- এমনকি প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতারাও বলেছেন, নির্বাচনে জালিয়াতি হয়নি।

মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি নতুন প্রশাসনের ক্ষমতা গ্রহণের কথা। সেই লক্ষ্যে বাইডেন শিবিরের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও উঠেছে।