বিজয় দিবসে কুচকাওয়াজ বাতিল

এবার ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সশস্ত্র বাহিনীর সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজ বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলমান করোনার মহামারির কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করছেন রাষ্ট্রপতি, ফাইল ছবি

এর আগে গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী তথা মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও একই কারণে বাতিল করা হয়।

জানা গেছে, বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্প্রতি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সেই বৈঠকের কার্যপত্র সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের প্রথম বৈঠকে বিজয় দিবস সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়। সেই কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হলে তিনি অনুশাসন দেন যে, বড় ধরনের জনসমাগম হওয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় এ বছর জাতীয় কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান রাখা সম্ভব নয়। পাশাপাশি দিবসের অন্যান্য কর্মসূচিগুলো সীমিত আকারে পালন করার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এ জন্য সবার সঙ্গে আলোচনা করে সীমিত আকারে একটি কর্মসূচি প্রণয়ন করার জন্য দ্বিতীয় বৈঠক আহ্বান করা হয়।

প্রসঙ্গত, বিজয় দিবসে সাধারণত জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে যোগ দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা। কুচকাওয়াজের অংশ হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি।

এ সময় উপস্থিত থাকেন প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান ও সংসদ সদস্যরা। এ ছাড়া কূটনৈতিক ও আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিরাও এতে উপস্থিত থাকেন।

অন্যদিকে, কুচকাওয়াজে থাকে বিমানবাহিনীর আকর্ষণীয় অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে।

মুক্তিযু্দ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবসে এবার ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা এবং দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় ৩১ বার তোপধ্বনি হবে। এদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এর পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এদিকে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যভিত্তিক পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভ ও ভূগর্ভস্থ জাদুঘরে। স্বল্পসংখ্যক দর্শনার্থীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেখানে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আরো জানা যায়, বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। ভার্চুয়াল এ আলোচনা সভার শিরোনাম ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন’।