ইরানে ইউরেনিয়াম উৎপাদন ও মজুতে আইন

ইরানের পার্লামেন্ট ২০ শতাংশ মাত্রায় নিরবচ্ছিন্নভাবে ইউরেনিয়াম উৎপাদন ও মজুত রাখার বিষয়ে একটি আইন পাস করেছে। এই ইউরেনিয়াম শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে হত্যার পরই এমন আইন পাস করলো দেশটি।

ইরানের পার্লামেন্ট

তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদলু বলছে, এই আইন পাসের ফলে ইরানের জাতীয় আণবিক শক্তি সংস্থা চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে। এর পর দেশটির সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তা সরবরাহ করবে।

এর আগে দেশবিরোধী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ক একটি বিল পর্যালোচনা করা হয়। এর পরই বিলটি অনুমোদন করেন ইরানের সংসদ সদস্যরা।

মোহসেন ফাখরিজাদেহ

আইনটিতে বলা হয়েছে, দেশে প্রতিবছর চাহিদা মেটানোর পর জাতীয় আণবিক শক্তি সংস্থাকে ২০ মাত্রার ১২০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিলম্ব গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে না।

এতে বলা হয়, তেহরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী পক্ষগুলো যদি তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি মেনে না চলে এবং ইরানের তেল ও তেলজাত পণ্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা না উঠায় এবং বিদেশ থেকে ইরানি অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে আরোপিত বাধা অপসারণ না করে, তাহলে এই আইন পাসের ৩০ দিনের মধ্যে পারমাণবিক ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত সব প্রটোকল বাস্তবায়ন থেকে সরে আসতে হবে।

গ্লোবাল ওয়াচডগ সম্প্রতি জানায় যে, ইরান ইউরেনিয়ামের মজুত ১২ গুণের বেশি বৃদ্ধি করেছে। অন্যদিকে, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) বলছে, ইরানে বর্তমানে ইউরেনিয়াম মজুতের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৪৪৩ কেজি।

প্রসঙ্গত, পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রধান উপাদান হলো ইউরেনিয়াম। এ কারণে ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে, দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। কিন্তু তেহরান শুরু থেকেই বলে আসছে যে, তাদের কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। এরই প্রেক্ষাপটে ২০১৫ সালে বিশ্বের ৬ জাতি-গোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের চুক্তি হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফভাবে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় এবং তেহরানের বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে থাকে।

এদিকে, গত শুক্রবার তেহরানের পার্শ্ববর্তী একটি এলাকায় গুপ্ত হামলা চালিয়ে ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী ফাখরিজাদেহকে হত্যা করা হয়। ইরান এই হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলকে দায়ী করছে। সেইসঙ্গে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে দেশটি।