যুক্তরাজ্যে করোনার ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি

প্রথম পশ্চিমা দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য করোনার ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। যৌথভাবে ফাইজার ও বায়োএনটেক উদ্ভাবিত এ ভ্যাকসিনটি আগামী সপ্তাহ থেকে ব্যবহার করা হবে। তবে সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে যারা রয়েছেন, তাদেরকে আগে এটি দেওয়া হবে।

যুক্তরাজ্যে করোনার ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি

ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান ও বিবিসি এ খবর দিয়েছে।

ফাইজার ও বায়োএনটেক নভেম্বরের মাঝামাঝি জানায়, তাদের উদ্ভাবিত করোনার ভ্যাকসিন ৯০ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম। তাছাড়া এটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্তও।

এর কয়েক দিন পর গত ১৮ নভেম্বর ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ফাইজার এবং জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক তাদের উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দাবি করা হয়, তাদের ভ্যাকসিনের কার্যকরিতা ৯৫ শতাংশ।

যুক্তরাজ্যে করোনার ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি, গার্ডিয়ানের শিরোনাম

এদিকে, ফাইজার ও বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিনকে নিরাপদ বলে মত দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা পণ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমএইচআরএ।

এমনই প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ সরকার ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে। কারণ সম্প্রতি দেশটিতে করোনার সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী। তবে প্রাথমিকভাবে বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকদের এ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

সাধারণত একটি ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের পর তা প্রয়োগের পর্যায়ে আসতে অনেক বছর সময় লেগে যায়। কারণ দীর্ঘ বছর ধরে এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হয়। এই প্রথম মাত্র ১০ মাসেই প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া হলো ফাইজারের ভ্যাকসিনটি।

জানা যায়, ব্রিটিশ সরকার আগেই ফাইজার ও বায়োএনটেক উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের ৪ কোটি ডোজের অর্ডার দিয়ে রেখেছে। যা দিয়ে দুই ডোজ করে ২ কোটি মানুষকে দিতে পারবে। দেশটির কর্তৃপক্ষ আশা করছে, চলতি বছরই তারা এক কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পাবে।

এক গবেষণার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাইজারের ভ্যাকসিনটি ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে ৯৪ শতাংশ কার্যকর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪১ হাজার মানুষের ওপর এই পরীক্ষা চালানো হয়। এদের অর্ধেককে ভ্যাকসিনটি দেওয়া হয়। বাকি অর্ধেককে দেওয়া হয় ছায়া ভ্যাকসিন বা ক্ষতিকর নয় এমন পদার্থ- যাকে রোগীরা ভ্যাকসিন হিসেবেই বিবেচনা করে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মডার্নাও তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিতে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। যা খুব শিগগিরই অনুমতি পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মর্ডানা দাবি করেছে, চূড়ান্ত পরীক্ষায় তাদের ভ্যাকসিন প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর প্রমাণ হয়েছে।

অন্যদিকে, রাশিয়া তাদের উদ্ভাবিত স্পুটনিক নামে একটি ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পরীক্ষা চালিয়ে বলেছে, সেটি ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর। এমনকি আগে তারা সেটিকে জরুরি ক্ষেত্রে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার কথাও জানিয়েছে।