শেষ বেলায় তুরস্ককে ‘কামড় দিচ্ছেন’ ট্রাম্প

রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনাকে কেন্দ্র করে তুরস্ককে বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল আমেরিকা। এবার তা বাস্তবায়ন তথা আঙ্কারার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। যেকোনো দিন এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হতে পারে বলেই শোনা যাচ্ছে।

এরদোয়ান ও ট্রাম্প

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স মার্কিন দুই কর্মকর্তাসহ চারটি সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে।

সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জেরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কাছাকাছি রয়েছে আমেরিকা। তুরস্কের বিরুদ্ধে যেকোনো দিন এই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ওয়াশিংটন যদি সত্যি সত্যি আঙ্কারার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাহলে সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে তুরস্কের দূরত্ব আরো বেশি বেড়ে যাবে।

তুরস্কের পৌঁছে যাওয়া এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা

জানা যায়, রাশিয়ার সঙ্গে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২৫০ কোটি ডলারের সামরিক চুক্তি করে তুরস্ক। এই চুক্তির আওতায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনা নিশ্চিত করে তুরস্ক।

এর পর থেকেই তুরস্ককে একের পর এক হুমকি দিয়ে আসছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। কিন্তু সে হুমকি উপেক্ষা করেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কিছু চালান ইতোমধ্যে দেশে নিয়ে গেছে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের সরকার।

মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান

এমনকি তুরস্কের এস-৪০০ কেনা ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান আঙ্কারার কাছে বিক্রি করা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তাতেও থামেনি তুরস্ক। বিষয়টি নিয়ে এতদিন চুপ ছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ক্ষমতার শেষ প্রান্তে এসে ট্রাম্প তুরস্ককে একটা আঘাত করতে চাচ্ছেন বলেই মনে হচ্ছে। আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হবে।

এদিকে, পার্সটুডের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আমেরিকা বলছে, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ন্যাটো জোটের সামরিক সরঞ্জাম এবং মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে মানানসই হতে পারে না। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাশিয়ার অত্যাধুনিক এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার কাছে মার্কিন এফ-৩৫ বিমানের দুর্বলতা প্রকাশ হয়ে পড়েছে। আর সে কারণেই তুরস্ককে এস-৪০০ না কেনার চাপ দিয়ে আসছে আমেরিকা।

উল্লেখ্য, তুরস্কের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার এই খবর এমন সময় প্রকাশ পেল যখন ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকে কেন্দ্র করে গ্রিসের সঙ্গে উত্তেজনা চলছে এবং এই ইস্যুতে আঙ্কারার ওপর নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।