রিয়াদে বন্দিশালায় অভিবাসীদের নির্যাতনের অভিযোগ

রিয়াদে করোনা মহামারির এই পরিস্থিতিতে কয়েক শ অভিবাসীকে আটক করেছে সৌদি আরব। ক্যাম্পে আটকদের নির্যাতনও করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লু)।

সৌদি আরবে আটক এক ইথিওপিয়ান নাগরিক

সংস্থাটির বরাত দিয়ে আজ বুধবার আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিটেনশন কেন্দ্রে থাকা অভিবাসীদের মধ্যে অধিকাংশই আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া থেকে আসা। বাকিরা অন্যান্য আফ্রিকান বা এশীয় দেশগুলো থেকে এসেছে। বৈধ আবাসনের অনুমতি না থাকাতেই তাদের গ্রেপ্তার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার প্রকাশিত এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে আটকদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, তাদের অত্যন্ত জনাকীর্ণ কক্ষে রাখা হয়েছে। রক্ষীরা তাদের ওপর রড দিয়ে নির্যাতন ও মারধর করেছে। যার ফলে অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে অন্তত তিন জন অভিবাসীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত মাসে অভিবাসন কেন্দ্র থেকে মুক্ত হওয়া সাত জন ইথিওপিয়ান নাগরিক এবং সম্প্রতি মুক্ত হওয়া দুই জন ভারতীয়ের সঙ্গে কথা বলে এই রিপোর্ট করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তারা সবাই জানান যে, তাদের একটি ডিটেনশন সেন্টারে ছোট্ট কক্ষে রাখা হয়েছিল। সেখানে আরো ৩৫০ জন অভিবাসী ছিল।

সৌদি আরবে আটক অভিবাসীরা

আটকদের মধ্যে দুই জন জানিয়েছেন, তাদের এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সেখানে রাখা হয়েছিল। এমনকি মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ডিটেনশন সেন্টারে কোনো ব্যবস্থা রাখেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ। ফলে অনেকের মধ্যেই ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে।

'অভিবাসীদের এক সঙ্গে খালি মেঝেতে সবার শোয়ার মতো পর্যাপ্ত জায়গা ছিল না। তাই অর্ধেক দিনের বেলা ঘুমাতো এবং বাকিরা রাতে।'

প্রতিবেদনে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, কয়েক ডজন অভিবাসী মেঝেতে সারি করে ঘুমাচ্ছে। কেউ টয়লেটে বসে ঘুমাচ্ছে, আবার কেউবা আবর্জনার স্তূপের পাশে।

এইচআরডব্লিউর শরণার্থী ও অভিবাসী অধিকার গবেষক নাদিয়া হার্ডম্যান বলেন, বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ সৌদি আরব। মহামারির ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে অভিবাসীদের এভাবে রাখার পক্ষে তাদের কোনো কারণই গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।