আপনি পড়ছেন

পাকিস্তান আমলে নির্মিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) দৃষ্টিনন্দন ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে। সেখানে নতুন রূপে ভবন তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হলেও তার রূপ বা নকশা এখনো ঠিক হয়নি।

tsc 2020বর্তমান টিএসসি

জানা যায়, ষাটের দশকের শুরুর দিকে টিএসসির ঐতিহাসিক নকশাটি করেন গ্রিক স্থপতি কনস্ট্যান্টিন ডক্সিয়াডেস। এর ভবন তৈরির কাজ শেষ হয় আইয়ুব খানের আমলে। এরপর এই স্থাপনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে টিএসসি ভবন ভাঙার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার কথা জানিয়েছে ঢাবির প্রকৌশল দপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নতুন ভবনটি নতুন রূপে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে তার গঠন-প্রকৃতি কেমন হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে আধুনিক টিএসসি ভবন দেখতে চান বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নতুন ভবনের নকশা প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

shekh hasina vc akhtaruzzamanপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঢাবি ভিসি আখতারুজ্জামান

ওই মাসেরই ৩০ তারিখ এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় নতুন টিএসসি ভবন নির্মাণের পক্ষে ব্যাখ্যা দেন ঢাবি উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ১৯৬৪ সালে ভবনটি নির্মাণের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী ও ২০০’র মতো শিক্ষক ছিলেন।

সেই বিবেচনায় ছোট জায়গায় পুরো স্থাপনা তৈরি করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ৪০ হাজার শিক্ষার্থী, ২ হাজারের বেশি শিক্ষক। টিএসসি আগের মতো থাকায় পুনর্বিন্যাসের নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর থেকেই টিএসসি ভবনের ভাঙা-গড়া নিয়ে ঢাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা চলছে। দৃষ্টিনন্দন ভবনটি ভাঙার বিরোধিতা করছেন শিক্ষকদের একটি অংশ। তবে নতুন রূপে টিএসসি গড়ার কাজ এর মধ্যেই শুরু করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। নকশা প্রস্তুত করতে ঢাবি কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদাপত্র নিয়েছে সরকারি এ সংস্থাটি।

tsc 2020 1

এরপরই নতুন রূপের ভবনের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার একটি তালিকা তৈরি করে ঢাবির প্রকৌশল দপ্তরকে দেন টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর। সেটি গণপূর্তের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে জমা দিয়েছে প্রকৌশল দপ্তর।

ওই তালিকায় রয়েছে- মহড়াকক্ষ, ব্যায়ামাগার, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কক্ষ, আন্তঃক্রীড়াকক্ষ, পৃথক ক্যাফেটেরিয়া, শিক্ষক মিলনায়তন, গাড়ি পার্কিংয়ের ৩ তলা স্থান, অতিথিকক্ষ, সুইমিংপুল ইত্যাদি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবির নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. আবদুল মান্নান জানান, টিএসসির নতুন নকশার বিষয়ে তাদের অন্ধকারে রাখা হয়েছে। গণপূর্তের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকের একটি প্রকল্প হবে এটি। চাহিদা অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধার একটা তালিকা জমা দেয়া হয়েছে, তার অগ্রগতি সম্পর্কে এখনো কিছু জানানো হয়নি।

নকশার দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত কর্মকর্তা আলী আশরাফ দেওয়ান জানান, তাকে নকশা তৈরির প্রস্তুতি নিতে বলা হলেও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।