গেল বছর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রায় ৫ হাজার

সদ সমাপ্ত ২০২০ সালে মোট ৪ হাজার ৯২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ হাজার ৯৬৯ জন মানুষ। পাশাপাশি আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮৫ জন। বুধবার নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এ তথ্য জানিয়েছে।

সাংবাদিকদের কাছে তথ্য উপস্থাপন করেন নিসচার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সড়ক দুর্ঘটনার এ পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন।

নিসচার তথ্যে বলা হয়, গত বছর রেল পথে দুর্ঘটনায় ১২৯ জন মানুষ প্রাণহানির শিকার হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৩১ জন মানুষ। অন্যদিকে, নৌ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২১২ জন। সেইসঙ্গে আহত বা নিখোঁজ হন ১০০ জন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছর সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে ৪৪৭টি দুর্ঘটনা ঘটে এবং এতে নিহত হয় ৪৯৫ জন। আর আহত হয় ৮২৩ জন।

সড়ক দুর্ঘটনা, ফাইল ছবি

অন্যদিকে, সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটে এপ্রিল ও মে মাসে। এর মধ্যে এপ্রিল মাসে ১৩২টি এবং মে মাসে ১৯৬টি দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুই মাসে কম দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর অংশ হিসেবে দেশে লকডাউন থাকায় এমনটা হয়েছে।

অঞ্চলভিত্তিক দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরে নিসচা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন লিখিত বক্তব্যে বলেন, বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ এলাকায়। অন্যদিকে, কম দুর্ঘটনা ঘটেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এলাকায়। এসব এলাকায় তুলনামূলক কম গতিতে এবং সতর্কতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে রেখে যানবাহন চালানোয় দুর্ঘটনা কম বলে দাবি করেন তিনি।

এ সময় দেশে সড়ক দুর্ঘটনার কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো- টাস্কফোর্স কর্তৃক প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশনামা বাস্তবায়ন না হওয়া, সড়কের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাব, লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগ, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়া গাড়ি চালানোর প্রবণতা, দৈনিক চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং করা, বিরতি ছাড়াই দীর্ঘসময় ধরে গাড়ি চালানো, সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বৃদ্ধি, মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো বন্ধে আইনের প্রয়োগ না থাকা, একই রাস্তায় বৈধ ও অবৈধ এবং দ্রুত ও শ্লথ যানবাহন চলাচল এবং রাস্তার পাশে হাটবাজার ও দোকানপাট থাকা।

সড়ক আইনের সঠিক বাস্তবায়ন সম্ভব হলে দেশের সড়ক নিরাপদ হয়ে উঠবে বলে মনে করেন নিসচা চেয়ারম্যান।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব লিটন এরশাদ। এ সময় সংগঠনের মহাসচিব সৈয়দ এহসানুল হক কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আজাদ ও সদস্য আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।