বাংলাদেশি দূতাবাসে শ্রম উইং খোলার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

বিশ্বের যেসব দেশে ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী আছে, সেসব দেশে থাকা বাংলাদেশি দূতাবাসে শ্রম উইং খোলার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ফাইল ছবি

রাজধানীর আগাঁরগাওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেসব দেশে ১০ হাজারের বেশি অভিবাসী রয়েছেন, সেসব দেশে থাকা বাংলাদেশি দূতাবাসে পর্যায়ক্রমে শ্রম উইং খোলা হবে। কোনো সমস্যা হলে যাতে প্রবাসী কর্মীরা সেখানে যেতে পারেন এবং সহজে সমস্যার সমাধান করতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন নির্মাণ করছে বাংলাদেশ। এতে প্রবাসী কর্মীরা সেখানে যেয়ে বসতে পারেন এবং সহজেই সমস্যারও সমাধান করা যাবে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গভবন থেকে যুক্ত হয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী

সরকার প্রধান বলেন, বিদেশে যেতে ইচ্ছুকরা যাতে নিজ এলাকায় বসে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ কর্মী হতে পারেন এবং বাইরে যেতে পারেন, বিদেশ গিয়ে যাতে কোনো অপ্রীতিকর অবস্থার মুখে না পড়েন, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সরকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু অনেকেই যথাযথ প্রশিক্ষণ না নিয়ে বিদেশ যাচ্ছেন এবং শুধু সার্টিফিকেট নিয়ে বিদেশে যাওয়ার কারণে সমস্যায় পড়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। আগের ৭০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। নতুন করে আরো ৪০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে আরো ১০০টি নির্মাণের।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ। মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে প্রবাসী কর্মীদের সন্তানদের সিআইপি (এনআরবি) সনদ ও শিক্ষাবৃত্তির চেক প্রদান প্রদান করা হয়।

দেশের আর্থ-সামাজিক ও অর্থনীতির উন্নয়নে প্রবাসীরা বিরাট অবদান রাখছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার তাদের সার্বিক কল্যাণেও বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এমন একটা সময় ছিল যখন জমিজামা ও ভিটেমাটি বিক্রি করে কিংবা চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বিদেশে যেতে হতো। কিন্তু প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বর্তমানে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়। যে ঋণ নিয়ে বিদেশে যাওয়া যায়, এখন আর জমিজমা কিংবা ভিটেমাটি বিক্রি করতে হবে না।

সরকার প্রধান আরো বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মানুষকে বিদেশ পাঠানোর সঙ্গে যারা ওতপ্রোতেভাবে জড়িত, সেই সমস্ত রিক্রুট এজেন্সিকেও খেয়াল রাখতে হবে যাতে বাইরে গিয়ে প্রবাসী কর্মীদের সম্মানহানি না হয়।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী হতাশ না হয়ে ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে দেশেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার আহ্বানও জানান।