সব ঘটনাকে 'সীমান্ত হত্যা' বলতে সংশয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

সীমান্তে ভারতীয় রক্ষীবাহিনী বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার সব ঘটনাকে 'সীমান্ত হত্যা' বলতে সংশয় প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আজ বৃহস্পতিবার ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন

বাংলাদেশ ও ভারত কেউই চায় না সীমান্ত হত্যা হোক- এমন দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে কেবল ভারত বা বাংলাদেশ সরকারকে দোষ দেয়া যাবে না। দুই দিকেই অনেকে আছে, যারা ড্রাগ, ফেনসিডিল ও গরু চোরাচালানের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায় থেকে সীমান্ত হত্যা বন্ধে বার বার অঙ্গীকার করা হয়েছে এবং তারা আশ্বাস দিয়েছে যে, সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা হবে। সে জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে সীমান্তে মরণাত্মক অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করা হবে।

সীমান্ত দিয়ে অনেক লোক আসা-যাওয়া করেন এবং তাদের মধ্যে দুষ্ট লোকও আছে। এই লোকগুলো অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ ও বহন করে থাকেন। তাছাড়া যারা মারা যান, তাদের অধিকাংশ কিন্তু সীমান্তে মরে না। ভারতের সীমানার অন্তত চার-পাঁচ কিলোমিটার ভেতরে তাদের হত্যা করা হয়। কাজেই সেটাকে 'সীমান্ত হত্যা' বলা যায় কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে, যোগ করেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, বিগত ২০২০ সালে সীমান্তে মোট ৪৮ জন বাংলাদেশি বিএসএফ কর্তৃক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৪২ জনকে গুলি করে ও ছয় জনকে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয় এবং অপহরণ করা হয়েছে আরো ২২ বাংলাদেশিকে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ২৬ জন। অপহৃতদের মধ্যে মাত্র পাঁচ জনকে ফেরত দেয়া হলেও বাকিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সে সম্পর্কে কারো ধারণা নেই।

এর আগে ২০১৯ সালে সীমান্ত হত্যার সংখ্যাটা ছিল ৩৮ জন, ২০১৮ সালে ১৪ জন। অর্থাৎ সংখ্যাটা প্রতিবছর বাড়ছে।