চীনের ‘হুঁশিয়ারি’, কেলির সফর বাতিল

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেলি ক্রাফ্টের পূর্বনির্ধারিত তাইওয়ান সফর বাতিল করে দেয়া হয়েছে। সিডিউল অনুযায়ী তিন দিনের সফরে আজ বুধবার দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে যাওয়ার কথা ছিল এই কূটনীতিকের। কিন্তু হঠাৎ করেই তা বাতিল করা হলো। তবে কেলির তাইওয়ান সফরের ঘোষণার পর এ নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিল চীন। 

কেলি ক্রাফ্ট

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে শপথ গ্রহণ করতে যাওয়া নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে সকল সরকারি ব্যস্ততা কমিয়ে আনছে বিদায়ী ট্রাম্প প্রশাসন। সেটির অংশ হিসেবে কেলি ক্রাফ্টের এই সফর বাতিল করা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আজ ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সোসাই ইনগ-ওয়েনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা ছিল মার্কিন কূটনীতিকের। এ ছাড়া দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তা এবং কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা ছিল তার।

এমতাবস্থায় কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যে, ট্রাম্পের অধীনে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের তীব্র অবনতির পর, বাইডেন প্রশাসনের ক্ষমতা গ্রহণের ঠিক এক সপ্তাহ পূর্বে কেলি ক্রাফ্টের এই সফর বেইজিং-ওয়াশিংটন সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।

এক তাইওয়ানী তরুণীর হাতে যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের পতাকা

বুধবার তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জোয়ান ওউ এক বিবৃতিতে বলেন, ক্রাফ্টের তাইপে সফর বাতিল হয়ে যাওয়ায় তারা কিছুটা হতাশ। তবে ভবিষ্যতে যে কোনো সময় দ্বীপ রাষ্ট্রে তাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত তাইওয়ান।

অভিযোগ করা হয়, গণতান্ত্রিক ও স্বশাসিত তাইওয়ান স্বৈরাচারী চীনের ক্রমাগত হুমকির মধ্যে রয়েছে। বেইজিং এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিকে নিজেদের অঞ্চল হিসেবে দেখায় এবং প্রয়োজনে জোর করে একদিন এটি দখল করারও অঙ্গীকার করেছে। তারা তাইওয়ানের যে কোনো কূটনৈতিক স্বীকৃতির বিরোধিতা করে এবং বিশ্ব মঞ্চ থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন রাখতে চায়।

বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছর তাইপেতে একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছিলেন। তখন থেকেই তিনি বাণিজ্য, সুরক্ষা এবং মানবাধিকারের মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চীনের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিরোধিতায় লিপ্ত হন।

এর আগে ক্রাফ্টের সফরের বিষয়টি ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের চীনা মিশন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে, যুক্তরাষ্ট্রকে তার ভুল পদক্ষেপের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে। তাদের উগ্র উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ, চীন-মার্কিন সম্পর্ক এবং জাতিসংঘে দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন সমস্যা সৃষ্টি করা বন্ধ এবং ভুল পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে বেইজিং।